হাফ ভাড়া দেওয়ায় শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছিত এবং হেনস্তা করার প্রতিবাদ করতে গিয়ে বাস মালিক এবং শ্রমিকদের হামলার শিকার হয়েছে বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের শিক্ষার্থীরা। এতে অন্তত ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে নগরীর রুপাতলী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বরিশাল-পটুয়াখালী-ঝালকাঠি মহাসড়কের গোলচত্বরে টায়ার জালিয়ে অবরোধ এবং বিক্ষোভ করে তারা। এসময় সংশ্লিষ্ট বাসটি ভাঙচুরসহ চার দফা দাবি তুলে ধরা হয়।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে নগরীর রুপাতলী থেকে পটুয়াখালী, কুয়াকাটা, বরগুনা, খুলনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
খবর পেয়ে বিএম কলেজ অধ্যক্ষ এবং সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং বাস মালিক ও শ্রমিক নেতারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলছে।
হামলার শিকার বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন কলেজের ইতিহাস তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাহান হাসান রাফি বলেন, আমাদের বিএম কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী লিপি আক্তার রাজাপুর থেকে ‘তওহীদ পরিবহন’ নামের একটি বাসে বরিশালের উদ্দেশে যাত্রা করে।
তিনি বলেন, বাসে ওঠার সময় কাউন্টারে কলেজের পরিচয়পত্র দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া রাখতে বলেন লিপি। কিন্তু কাউন্টার থেকে হাফ ভাড়া নিতে রাজি হয়নি। উল্টো মজিবর রহমান নামের একজন রাজাপুর কাউন্টারে বসে শিক্ষার্থী লিপি আক্তারকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। এতে সে কান্না করে দেয়। শুধু তাই নয়, বাসে সিট খালি থাকলেও লিপিকে সমস্ত পথ দাঁড় করিয়ে বরিশালে নিয়ে আসে।
তিনি আরও বলেন, বাসের মধ্যেও তাকে হেনস্তা করে। বিষয়টি সে বাসের মধ্যে বসেই ফোন করে আমাদের জানায়। আমরা রুপাতলী বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে আমাদের বোনের সাথে এমন করার কারণ জানতে চাই চালকের কাছে। ঠিক সেই মুহূর্তে রুপাতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় থাকা বাস মালিক এবং শ্রমিকরা এক সঙ্গে এসে ডাকাত ডাকাত বলে আমাদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে অতর্কিত হামলা করে। এতে অন্তত ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। আমরা এর বিচার চাই।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বিএম কলেজের ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইমাম হাসান বলেন, ‘দেশের যেকোনো প্রান্তে শিক্ষার্থীদের জন্য বাসে হাফ ভাড়া নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। সেই ভাড়ার জন্য আজ আমার বোনকে খুব বাজেভাবে হেনস্তা করে বাসের সহকারী, সুপারভাইজার এবং চালক। আমরা বিষয়টি জানার জন্য রূপাতলী বাসস্ট্যান্ডে এসেছিলাম। অথচ বাসের শ্রমিকরা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করেছে। এর বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না। সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভসহ আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান বলেন, ভাড়া নিয়ে শিক্ষার্থী এবং বাস শ্রমিকদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ওপর বাস শ্রমিকরা হামলা করেছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। এজন্য শিক্ষার্থী বাস ভাঙচুর এবং সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছে। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
মন্তব্য করুন