লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মেধাবী শিক্ষার্থী শিমা আক্তার কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তবে অর্থের অভাবে তার ভর্তি নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। দরিদ্র পরিবারের পক্ষে কোনোভাবেই তার ভর্তিসহ পড়ালেখার খরচ বহন করা সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে শিমার ভর্তি নিয়ে শঙ্কার ঘটনাটি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নজরে এসেছে। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার মেধাবী শিমার মেডিকেলে ভর্তিতে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে সহযোগিতা করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিসি।
শিমা কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চরজাঙ্গালীয়া গ্রামের আলী আহমেদের মেয়ে। তারা ৬ ভাই-বোন। এর মধ্যে সে পরিবারের পঞ্চম সন্তান।
জানা গেছে, সীমা ২০২১ সালে চরকালকিনি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৮৯ পেয়ে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়। ভাড়ার অভাবে নিয়মিত কলেজ যেতে পারত না সে। এরপরও ২০২৩ সালে সে জিপিএ ৪.৮৩ পেয়ে এইচএসসি পাস করে। এরপর সে মেডিকেলে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নেন। তবে প্রথমবার কোথাও ভর্তি হতে পারেনি। তবে পুনরায় ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৪৩১৬তম স্থান অর্জন করে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে সুযোগ পায়।
শিমার মা আয়েশা বেগম বলেন, পড়ালেখার প্রতি শিমার আগ্রহ বেশি। অনেক কষ্ট করে তার পড়ালেখার খরচ চালিয়ে এসেছি। অভাব-অনটনের মধ্যে তাকে মেডিকেলে ভর্তি করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
শিমা আক্তার বলেন, দারিদ্র্যকে জয় করা গুণীজনের জীবনী পড়ে আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি। আমি শুরু থেকেই মেডিকেলে পড়ার স্বপ্ন দেখেছি। প্রথমবার না পারলেও এবার আমি ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। আমার এ সাফল্যে আমার মা, ভাই ও শিক্ষকরা আমাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছে। আমার স্বপ্ন পূরণে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
চরকালকিনি আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মাহমুদুর রহমান বেলায়েত জানান, অভাবে শিমার পড়ালেখা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। পরে বিদ্যালয়ের তার সব খরচ মওকুফ করা হয়েছিল। তবে সে মেধাবী শিক্ষার্থী। সামনে তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার বলেন, শিমা নামে এক ছাত্রী মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। কিন্তু আর্থিক কারণে তার ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে শুনিছি। তার ভর্তি নিশ্চিত করতে জেলা ও কমলনগর উপজেলা প্রশাসন সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে।
মন্তব্য করুন