রাজশাহীর চারঘাটে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতির পদ দখল নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ১০ আহত হয়েছেন। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার সরদহ ইউনিয়নের পাটিয়াকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলার পাটিয়াকান্দি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম, শিমুলিয়া গ্রামের শাহজাহান আলী, সেলিম হোসেন, নজমুল আলী, পলাশ আলী, শাহু সর্দার ও কাজিম উদ্দিন মোল্লা। আহতরা চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও স্থানীয়রা জানায়, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচন কেন্দ্র করে জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সাইদ চাঁদ ও জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এর মধ্যে বিদ্যালয়ের নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করা হলে প্রধান শিক্ষক জাকারিয়ার বিরুদ্ধে নির্বাচনে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে আবু সাইদ চাঁদ গ্রুপ নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকে।
তবে তারা প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে আওয়ামী লীগের যোগসূত্রতার অভিযোগ তুলে তাকে বিদ্যালয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বিদ্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেয়। এরপর থেকে প্রধান শিক্ষক ছুটি নিয়ে গত ১০ দিন ধরে বিদ্যালয়ে যাননি।
এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে চাপা উত্তেজনা চলছিল। এ অবস্থায় ছুটি শেষে প্রধান শিক্ষক জাকারিয়া সোমবার সকালে কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে বিদ্যালয়ে যান। এ সময় স্থানীয়রা বহিরাগত লোক নিয়ে আসার অভিযোগ তোলেন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
উভয়পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হলে একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে কমপক্ষে ১০ আহত হয়েছেন। এ সময় সরদহ ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাহাবুল ইসলামের বাড়িতেও হামলা চালিয়ে মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
এ ঘটনায় আহত স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও আবু সাইদ চাঁদের অনুসারী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের মদদপুষ্ট প্রধান শিক্ষক ৩০-৪০ জন বহিরাগত ক্যাডার নিয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ বিদ্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় স্থানীয়রা বাধা দিলে তারা অতর্কিত হামলা চালিয়ে আমাদের কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে পাটিয়াকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ কে এম জাকারিয়া বলেন, নিয়ম অনুযায়ী তপশিল ঘোষণা করে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন দিয়েছিলাম। কিন্তু একটি পক্ষ নির্বাচনে অংশ না নিয়ে আমার বিরুদ্ধে নানা রকম মিথ্যা অভিযোগ তুলে বিদ্যালয়ে যেতে বাধা প্রদান করছে। বহিরাগত না, আত্মীয়স্বজন কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে স্কুলে গিয়েছিলাম। কিন্তু তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে আমাদের ওপর।
জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল বলেন, ওই স্কুলটি যাদের দান করা মাটির ওপর প্রতিষ্ঠিত তাদের পরিবার থেকেই সভাপতি হয়ে আসছেন। এলাকারও লোকজনও তাদেরই চায়। কিন্তু একটি পক্ষ প্রতিহিংসামূলকভাবে তা মানতে নারাজ। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে ঝামেলা চলছে।
তবে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।
এ বিষয়ে চারঘাট মডেল থানার ওসি আফজাল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে যাওয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।
মন্তব্য করুন