দেশের সবচেয়ে বড় বেসরকারি চিড়িয়াখানা দিনাজপুরের ‘স্বপ্নপুরী’ পার্কে অভিযান চালিয়েছে বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট ও সামাজিক বন বিভাগ। এ সময় ৭৪টি বন্যপ্রাণী উদ্ধার করা হয়।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) নবাবগঞ্জে অবস্থিত চিড়িয়াখানাটিতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নির্দেশে এবং বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষকের তত্ত্বাবধানে এ অভিযান চালানো হয়।
বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ লঙ্ঘনের অভিযোগে এ বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে পার্কে অবৈধভাবে আটকে রাখা বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী উদ্ধার করা হয়।
বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক ছানাউল্লা পাটওয়ারীর সার্বিক দিকনির্দেশনায় বন্যপ্রাণী পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আস সাদিক এবং বন্যপ্রাণী পরিদর্শক অসীম মল্লিকের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে আরও উপস্থিত ছিলেন- সামাজিক বন বিভাগ দিনাজপুরের সহকারী বন সংরক্ষক মিজ নুরুন্নাহারসহ বন অধিদপ্তরের অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অভিযানের সময় নবাবগঞ্জ থানার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের সার্বিক সহযোগিতা করে।
অভিযানে উদ্ধার করা প্রাণীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- হুলক গিবন, এশিয়াটিক ব্ল্যাক বিয়ার, ক্যাপড ল্যাঙ্গুর, গ্রেটার হর্নবিল, লজ্জাবতী বানর, ভোঁদড়, সাপ ও কচ্ছপ। এদের মধ্যে কিছু প্রাণী আহত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
অভিযান দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, স্বপ্নপুরী পার্কে দীর্ঘদিন ধরে এসব বন্যপ্রাণী আইনবহির্ভূতভাবে প্রদর্শন করা হচ্ছিল। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের আওতায় এ বিষয়ে প্রাথমিক তদন্ত শেষে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান, জব্দ করা প্রাণীদের উদ্ধার করে তাদের পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া স্থানীয় জনগণকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
জানা যায়, বন্যপ্রাণী প্রদর্শনের বিষয়ে পার্কের সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে কোনো বৈধ অনুমতিপত্র পাওয়া যায়নি। অভিযানের পর পার্কের ব্যবস্থাপককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং এ বিষয়ে যথাযথ তদন্ত চলছে।
বন্যপ্রাণীর টর্চারস সেল নামক পরিচিত চিড়িয়াখানা বন্ধে ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে জানান অভিযানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।
মন্তব্য করুন