একটি মহল গুজব ছড়িয়ে চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকায় (সিইপিজেড) অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)।
সংশ্লিষ্টদের দাবি, সাম্প্রতিক সময়ে কিছু কুচক্রী মহল তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইচ্ছাকৃতভাবে গুজব ছড়িয়ে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকদের ক্ষেপিয়ে তুলে ইপিজেডে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। এর সঙ্গে বহিরাগতরাও যুক্ত হচ্ছে।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সিএমপির সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (জনসংযোগ) মো. রইছ উদ্দিন।
উপকমিশনার রইছ উদ্দিন বলেন, গত বুধবার (২২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ইপিজেড ২ নম্বর সড়কের একটি নির্মাণাধীন ভবনে তিন শিশু প্রবেশ করে। নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ও নির্মাণ শ্রমিকরা তাদের ধরে ফেলে। পরবর্তীতে দুজনকে ছেড়ে দিলেও একজনকে আটকে রাখে। নির্মাণাধীন ভবনের পাশের একটি কারখানার পঞ্চম তলার কিছু শ্রমিক সেটি দেখতে পেয়ে শিশুদের জবাই করার গুজব ছড়িয়ে দেয়। ছুটি শেষে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে নির্মাণাধীন ভবনটিতে তাণ্ডব চালায় এবং নির্মাণ শ্রমিকদের থাকার শেডসহ বিভিন্ন কিছুতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গেও সংঘর্ষে জড়ায় এবং রাত ১২টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ওই তিন শিশুকে বিক্ষোভকারীদের সামনে হাজির করে।
তিনি আরও বলেন, পরেরদিন বিকেলে শ্রমিকরা পুনরায় ওই নির্মাণাধীন ভবনটিতে শিশুদের খোঁজার নাম করে প্রবেশ করে দ্বিতীয় দিনের মতো তাণ্ডব চালায় এবং বেপজা কার্যালয়েও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বেশকিছু নথিপত্র জ্বালিয়ে দেয়। বিক্ষুব্ধদের মারধরে বেপজার তিন কর্মকর্তা আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
রবিউল, হাসান ও সাগর নামের এ তিন শিশুর বরাতে এ পুলিশ কর্মকর্তা জানান, সল্টগোলা ক্রসিং, মাইলের মাথা এবং ফ্রি পোর্ট এলাকায় তাদের বাসা। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ভাঙা লোহা খুঁজতে নির্মাণাধীন ভবনটিতে প্রবেশ করেছিল তারা।
শিশু রবিউল জানায়, তারা নির্মাণাধীন ভবনটিতে প্রবেশের পর শ্রমিকরা তাদের ধরে ফেলে। অন্য দুজনকে চড়-থাপ্পড় দিয়ে ছেড়ে দেওয়ার পর তাকে ভেতরে নিয়ে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করে। পরে লোকজন সেখানে জড়ো হয়ে সেখানে এসে তাকে ছাড়িয়ে আনে।
গুজবের বিষয়ে সচেতন থাকার অনুরোধ জানিয়ে নগর পুলিশের উপকমিশনার রইছ উদ্দিন বলেন, যে তিন শিশুকে নিয়ে গুজব ছড়ানো হয়েছিল, সেই তিন শিশুকে সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করেছে। বর্তমানে তারা পুলিশের তত্ত্বাবধানে নিজ নিজ অভিভাবকের জিম্মায় আছে। কারখানার ওপর যাদের জীবিকা নির্বাহ করে সে শ্রমিকরা এসব করতে পারে না। দেশ ও রাষ্ট্রবিরোধী মহল সুপরিকল্পিতভাবে এসব গুজব ছড়াচ্ছে। দেশের পোশাক খাত অস্থিতিশীল হলে এখানে বিদেশি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে।
মন্তব্য করুন