দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে যশোরের মনিরামপুরে মোটরসাইকেল শোডাউন করেছেন বিএনপি কর্মী ও ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী আহসান হাবিব রিপন। এ সময় প্রায় দেড়শ মোটরসাইকেল নিয়ে শোডাউন করায় ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার ঝাঁপা ইউনিয়নের বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয় মোটরসাইকেল শোডাউন। ইউনিয়ন ঘুরে এসে সন্ধ্যায় শেষ হয় এ শোডাউন। এর আগে ১৭ জানুয়ারিও মোটরসাইকেল শোডাউন করেন তিনি।
জানা গেছে, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হিসেবে আহসান হাবিব রিপন মোটরসাইকেল শোডাউনের আয়োজন করেন। এ শোডাউনের নেতৃত্ব দেন মণিরামপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব হুমায়ুন কবির। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ৯নং ঝাঁপা ইউনিয়ন ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইকরামুল, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক বিপ্লব, ইউনিয়ন কৃষক দল সহসভাপতি আলমগীর হোসেনসহ, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জনগণের দুর্ভোগ হয় এমন কোনো কর্মসূচি পালনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বিএনপির হাইকমান্ড। বিশেষ করে মোটরসাইকেল শোডাউন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ঝাঁপা ইউনিয়নে বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পার্টির সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে যেখানে মোটরসাইকেল শোডাউনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে সেখানে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদ প্রার্থী হিসেবে আহসান হাবিব রিপন মোটরসাইকেল শোডাউনে দিয়েছেন। একজন সাধারণ সম্পাদক পদ প্রার্থী এই ধরনের কাজ কীভাবে করেন? আজকের এই শোডাউনের জন্য সাধারণ মানুষের কাছে আমাদের পার্টির সুনাম নষ্ট হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউনিয়ন বিএনপির এক সিনিয়র নেতা বলেন, ৫ তারিখের আগে যাকে দেখা যায়নি; তিনি এখন এসে সাধারণ সম্পাদক হতে চান। আহসান হাবিব রিপন এর আগে দলের কোনো পদেও ছিলেন না। তিনি এলাকায় মিছিল, মিটিং করে বলে বেড়াচ্ছেন ঝাঁপা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। ওপর মহলে তার যোগাযোগ আছে ভালো, তিনি এবার সাধারণ সম্পাদক হবেন।
এ বিষয়ে ঝাঁপা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী আহসান হাবিব রিপন বলেন, কয়েক দিনের মধ্যে কমিটি গঠন হবে। আমি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী। এজন্য মোটরসাইকেল শোডাউন, মিছিল-মিটিং করতে হচ্ছে। তবে আমার মোটরসাইকেল শোডাউনে কোনো ভোগান্তি হয়নি।
যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেছেন, হাইকমান্ডের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগে গত ৮ সেপ্টেম্বর দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটি, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও তৃণমূল পর্যায়ে চিঠি পাঠিয়ে শোডাউন বন্ধ করার নির্দেশনা দেয় বিএনপি।
দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা ওই চিঠিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) এবং এর সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাসহ সংশ্লিষ্ট সবার উদ্দেশে বলা হয়, ‘আপনাদের অধীনস্থ কোনো ইউনিটে সাংগঠনিক কাজের উদ্দেশ্যে সফরকালে কোনো মোটরসাইকেল বহর ও কারসহ অন্য কোনো যানবাহনে শোভাযাত্রা পরিহার করতে হবে। এসব শোভাযাত্রার কারণে পাশ দিয়ে চলাচলরত সাধারণ মানুষের যানবাহন বা পথচারীদের যাতায়াতে ভয়ানক বিঘ্ন ঘটে।
মন্তব্য করুন