পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে খালিদ মাহমুদ সৈকত নামে এক ছাত্রদল নেতার একটি কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। দুই মিনিট ৭৪ সেকেন্ডের ওই ফোনালাপে তাকে বিকাশ নামে এক ব্যক্তির কাছে পিকনিকের জন্য ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করতে শোনা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) ফেসবুকে তার চাঁদা দাবির কল রেকর্ডটি ছড়িয়ে পড়ে।
অভিযুক্ত খালিদ মাহমুদ মাহমুদ সৈকত দেবীগঞ্জ সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক। অন্যদিকে বিকাশ রায় দেবীগঞ্জ সেটেলমেন্ট অফিসে চুক্তি ভিত্তিতে কাজ করেন।
ভাইরাল হওয়া সেই ফোনালাপে খালিদ মাহমুদ সৈকতকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি উনাদের সঙ্গে কথা বলেছি, আপনার বিষয়ে সব জানিয়েছি। এখন ওনারা বলতেছে, থার্টি ফার্স্ট নাইটের পিকনিকে একটা পার্টি দিতে হবে।’ বিকাশ রায় জিজ্ঞেস করেন, ‘কী রকম সেটা, কত দিতে হবে?’ উত্তরে সৈকত বলেন, ‘কত, বিশ (২০) হাজার হইলে হবে।’ বিকাশ রায় প্রত্যুত্তরে বলেন, ‘আচ্ছা ভাই আমি তো বললামই আমার তো ওই রকম সামর্থ্যই নাই।’ এরপর সৈকতকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি আপনার পক্ষ নিয়েই কথা বলেছি। আমি প্রথমে কী বলেছি, আর এখন কত বললাম। আমি নিজেই এখন নমনীয় হয়ে গেছি। যাই হোক কখন আপনি টাকা দিবেন?’ এরপর বিকাশ রায় সৈকতকে বলেন, ‘শোনেন সৈকত ভাই, আমার এ রকম কোনো কিছু নাই। এ জন্য আমার বাড়িটা ছোট, ভাই হিসেবে দেখে আসার কথা বললাম।’
সৈকত এবার বলেন, ‘আমি বুঝেছি, আমি ঐজন্য বলেছি, নামটাম দেওয়ার দরকার নাই। দাদা হিসেবে পিকনিকে একটা ভালো টাকা দিলেই হবে। আমরা আর ইয়া করতেছি না।’ বিকাশকে এবার বলতে শোনা যায়, ‘আমার হাতে টাকাপয়সা নাই। একদম আদি ইতিহাস তোমাকে বললাম। আমি আগে রাজমিস্ত্রির কাজ করতাম। কোনো রকম দিনাতিপাত করতাম।’ সবশেষে সৈকত বিকাশকে বলেন, ‘আর এইলা না কন, এইলা আমার মুখস্থ হয়েছে। আপনি এখন কখন দেখা করবেন সেটা বলেন। টাকা ম্যানেজ করে রাতের মধ্যে দেখা করেন। কোনো প্যারা নিয়েন না।’
নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রদল নেতা খালিদ মাহমুদ সৈকত। তিনি বলেন, ‘রেকর্ডটি আমিও পেয়েছি। রেকর্ডটি এআই প্রযুক্তিতে বানানো। রেকর্ডের ব্যক্তিটি আমি নই। এ বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং (সংবাদ সম্মেলন) করব।’
এদিকে সৈকত অভিযোগ অস্বীকার করলেও বিকাশ রায় অডিও ক্লিপটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন এবং বিষয়টি তাদের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে বলেও জানান। বিকাশ রায় বলেন, ‘আমি সেটেলমেন্টে কাজ করে নাকি অনেক দুর্নীতি, অনিয়ম করেছি। এ জন্য প্রথমে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। একপর্যায়ে ২০ হাজার টাকা চায়। আমি কোনো টাকাই দেইনি।’
ফোনকল ফাঁসের বিষয়ে পঞ্চগড় জেলা ছাত্রদলের সভাপতি তারিকুজ্জামান তারেক বলেন, ‘ছাত্রদলে থেকে অপকর্ম করার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পেলে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মন্তব্য করুন