নিজের পায়ে দাঁড়াতে চান ‘হাত দিয়ে হাঁটা’ সবুজ। জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। নেই একটি হুইল চেয়ার কেনার সামর্থ্য। তবে আছে প্রবল ইচ্ছাশক্তি ও জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার অদম্য ইচ্ছা। পড়ালেখা শেষ করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায় সবুজ কুমার মাহাতো।
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে উটরা হাজীপুর গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী সবুজ কুমার মাহাতো। প্রতিবন্ধী অবস্থায় জন্ম নিলেও ছোটবেলা থেকেই তার স্বপ্ন, লেখাপড়া শেষ করে একদিন নিজের পায়ে দাঁড়াবে। স্বাভাবিক মানুষের মতো পা না থাকায় পায়ের চাপটা নিতে হয়েছে কোমল হাতে। গোটা শরীরের ভর তার হাতের তালুতে। তবুও থেমে নেই তার পথচলা।
রায়গঞ্জ উপজেলার নিমগাছীর সোনাখাড়া ইউনিয়নের উটরা হাজীপুর গ্রামের সুবল চন্দ্র মাহাতোর ছেলে সবুজ কুমার মাহাতোর। ক্ষিরতলা আদিবাসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ে সে।
জানা যায়, বাড়ি থেকে কোমরে ভর করে হাতে হেঁটে রাস্তা পেরিয়ে বাকিটা ভ্যানে করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যায় সবুজ। লেখাপড়া করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর স্বপ্নপূরণে প্রেরণা জোগায় সহপাঠী ও শিক্ষকরা। ছোটবেলা থেকে প্রতিদিনের কাজকর্ম আর পড়ালেখায় বাবা-মা তার সহযোগী। তবুও সব বাধা পেরিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় সবুজ।
ক্ষিরতলা আদিবাসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নজরুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, সে ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। ৪র্থ শ্রেণির ৩০ জন্য শিক্ষার্থীর মধ্যে সবুজের রোল নম্বর ২। স্কুল থেকে সব সুবিধা দেওয়া হয়।
সমাজসেবক ও সাবেক ইউপি সদস্য কাজী উদ্দিন কাজি বলেন, আমার বাড়ির পাশেই সবুজের বাড়ি জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী, মেধাবী ছাত্র সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত। তার লেখা পড়া ও চলাচলের জন্য হুইল চেয়ারসহ অর্থনীতি সহযোগিতা এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
সবুজ জানান, আমার মতো প্রতিবন্ধীদের অনেক অবহেলার শিকার হতে হয়। আমি চাই প্রতিবন্ধীদের যেন কেউ অবহেলা না করে। অতি দরিদ্র শারীরিক প্রতিবন্ধীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াতে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হুমায়ুন কবির কালবেলাকে বলেন, সবুজ কুমার মাহাতোর লেখাপড়া যেন চালিয়ে যেতে পারে এজন্য সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। তবে সবুজের পাশে উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান।
মন্তব্য করুন