নোয়াখালী সদর উপজেলায় ওএমএসের চাল গরিবদের মাঝে বিক্রি না করে অধিক লাভে খোলা বাজারে বিক্রির অভিযোগ ডিলার ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা স্বপন মজুমদারের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে মাইজদী বাজারে ভ্যানগাড়ি যোগে ৫ বস্তা চাল নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা চালকসহ বস্তাভর্তি গাড়িটি আটক করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, মাইজদী বাজারের ওএমএস ডিলার স্বপন মজুমদার হতদরিদ্র গরিবদের মাঝে চাল বিক্রি না করে অধিক লাভে স্থানীয় সোহাগের কাছে ৫ বস্তা চাল বিক্রি করেন। সোহাগ ভ্যানগাড়ি যোগে সেই চাল নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা চালকসহ বস্তাভর্তি গাড়িটি আটক করেন। এ সময় সোহাগ ও ভ্যানচালক জানান, স্বপন মজুমদার থেকে তারা চাল কিনেছেন। বস্তাপ্রতি ১৩০০ টাকা দামে কিনেছেন। এ সময় স্থানীয়রা সাংবাদিকদের খবর দেন। সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নোয়াখালী খাদ্য অধিদপ্তরে খবর দেন। খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান ও ইউসুফ আলী ঘটনাস্থলে এসে ডিলার স্বপন মজুমদারের উপস্থিতিতে আটক চাল ক্রেতা সোহাগ ও ভ্যানগাড়িচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার সত্যতা পান।
এদিকে ডিলার স্বপন মজুমদার ও তার ভাই সঞ্জয় মজুমদার তাদের দোকানের সামনে চাল ক্রেতা সোহাগ ও ভ্যানচালকের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের দিকে তেড়ে আসে। উপস্থিত জনতা বারণ করলে তখন তারা (ডিলার) আরও ক্ষিপ্ত হয়ে যান। এ সময় ঘটনাস্থলের আশপাশে বসবাসরত স্বপন মজুমদারের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা প্রতিবাদকারী সাধারণ জনগণের উপর হামলা করতে উদ্যত হয়। একই সময়ে সন্ত্রাসীরা বস্তাভর্তি ভ্যানগাড়িটি ঘটনাস্থল থেকে নিয়ে পালিয়ে যান। এ ঘটনা সাংবাদিকরা সুধারাম থানার ওসিকে অবহিত করলে সুধারাম থানার এসআই মনিরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
স্থানীয় শাহাবুদ্দিন ও শরিফুল ইসলাম খোকন অভিযোগ করেন, ডিলার স্বপন মজুমদার আওয়ামী লীগের দলীয় প্রভাব বিস্তার করে দীর্ঘদিন থেকে এখানে গরিব ও হতদরিদ্রদের কাছে চাল ও আটা বিক্রি না করে খোলা বাজারে ও ব্যক্তি বিশেষের কাছে বেশি দামে বস্তা হিসেবে বিক্রি করে আসছেন। অভিযোগ রয়েছে, অফিসকে ম্যানেজ করে ও স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসী ও বখাটেদের সুবিধা দিয়ে এ অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন স্বপন মজুমদার।
এ নিয়ে জানতে চেয়ে নোয়াখালী জেলা খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সালমা আক্তার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আমজাদ হোসেন চৌধুরীকে (কারিগরি) সঙ্গে নিয়ে ৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বর্তমানে তদন্ত চলছে।
মন্তব্য করুন