জুলাই অভ্যুত্থান চলাকালে আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড ও আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় জড়িত বেরোবি শিক্ষার্থীদের এক ও দুই সেমিস্টার বহিষ্কারের শাস্তির সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। জড়িতদের তিনদিনের মধ্যে স্থায়ী বহিষ্কার করা না হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মিডিয়া চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি থেকে প্রশাসনের নেওয়া শাস্তির সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেন তারা। পরে প্রশাসনিক ভবন অভিমুখে প্রতীকী পদযাত্রাও করেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, র্যাগিং বা পরীক্ষায় নকল করলে যে শাস্তি একজনকে হত্যা করার শাস্তি একই হতে পারে না। এক-দুই সেমিস্টার বহিষ্কারের এ সিদ্ধান্ত প্রহসন ছাড়া আর কিছু না। আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড ও আন্দোলনে হামলায় জড়িতদের স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে। যাদের পড়াশোনা শেষ হয়েছে তাদের সার্টিফিকেট বাতিল ও মামলার ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া জড়িত অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী হামলায় জড়িত থাকলেও তদন্ত প্রতিবেদনে তাদের নাম আসেনি। নতুন করে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধেও মামলার দাবি জানান তারা। তিন দিনের মধ্যে দাবি না মানা হলে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দেন কর্মসূচি থেকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইইই বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, যারা আবু সাঈদের গলা টিপে ধরেছিল, আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করল তাদের শুধু এক-দুই সেমিস্টার বহিষ্কারের শাস্তি মানি না। হামলাকারীরা এখনো প্রকাশ্যে ক্যাম্পাসে ঘুরছে। জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিয়মিত অফিস করছে। বিচার নিয়ে তালবাহানা শুরু করেছে। প্রশাসন কঠোর শাস্তি দিতে না পারলে আন্দোলন ছাড়া কোনো পথ খোলা থাকবে না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেরোবি সমন্বয়ক শামসুর রহমান সুমন বলেন, অপরাধী যাদের ১২ সেমিস্টার বহিষ্কার করা হলো তারা পরে ফিরে গিয়ে আমাদের গলা টিপে ধরবে। প্রশাসনের নেওয়া সিদ্ধান্ত পুনর্মূল্যায়ন করে তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে। এ ছাড়া হামলাকারীদের ছাত্রত্ব শেষ হয়ে যাওয়া শিক্ষার্থী ও শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
এর আগে গত ৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৯তম সিন্ডিকেট সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, ভাঙচুর এবং শহীদ আবু সাইদ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৫৬ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়। এর মধ্যে ২৩ জনকে এক সেমিস্টার ও ৩৩ জনকে দুই সেমিস্টার বহিষ্কার করার হয়েছে। এ ছাড়া ছাত্রত্ব শেষ হওয়ায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছে।
মন্তব্য করুন