বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, আমরা যদি সংঘবদ্ধভাবে কিছু সংখ্যক লোক অগ্রসর হই তাহলে কোনো চাঁদাবাজ, মাস্তান, টেন্ডারবাজ ও দখলদার শ্রেণি বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে না।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে মৌলভীবাজারের রাজনগরে ইটা চা বাগানের ঈদগাহ ময়দানে ইসলামি মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় মামুনুল হক বলেন, সত্য অনেক শক্তিশালী। সত্যের অনুসারীরা কম হলেও তারা শক্তিশালী। মিথ্যার অনুসারীরা সংখ্যায় বেশি হলেও তারা দুর্বল। তাই দেশ গঠনে ১৮ কোটি মানুষের চেয়ে ১৮ লাখ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলেই সত্যের বিজয় নিশ্চিত। জনগণের সম্পদ চুরি করে যারা খায়, এটা কোনো বৈধ সম্পদ নয়, এই সম্পদ হলো জাহান্নামের আগুন। প্রচলিত রাজনৈতিক বন্দোবস্ত দিয়ে এভাবে এক শ্রেণির মানুষ, তারা হারামখোরি করে জনগণের সম্পদ চুরি করে। তারা ক্ষমতায় গেলে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করে। আবার ক্ষমতা হারিয়ে গেলে শুরু হয় তাদের ইনভেস্টমেন্ট।
তিনি আরও বলেন, সারা পৃথিবীজুড়ে পশ্চিমা সভ্যতা যে বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তুলেছে, যে পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থা গড়ে তুলেছে, এই পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থা ভোগবিলাসের অর্থব্যবস্থা, এই অর্থব্যবস্থা গরিবের রক্ত শোষণ করে বড়লোকদের আরাম-আয়েশের ব্যবস্থা করবার অর্থব্যবস্থা। আর এই অর্থব্যবস্থা দিয়ে রাজনৈতিকভাবে পশ্চিমারা গোটা পৃথিবীতে জুলুমতন্ত্র কায়েম করছে। এই ব্যবস্থাকে উৎখাত করার জন্যে একমাত্র বিকল্প ইসলাম ও খেলাফত।
তিনি বলেন, অন্য কোনো ব্যবস্থার মাধ্যমে শুধু নেতাদের স্বার্থ উদ্ধার হয়, প্রচলিত শাসন ব্যবস্থার মাঝে কিছু মানুষের স্বার্থ উদ্ধার হয়, প্রকৃত অর্থে জনগণের ভাগ্যের উন্নয়ন হয় না। কারণ এই ব্যবস্থার সিস্টেমের মধ্যে সেটা নেই। আছে জনগণের অধিকার হনন করে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ চুরি করে এক দলের ওপর আরেক দল লালিতপালিত হয়।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নতুন এই আমির বলেন, বাংলাদেশে একটা রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রচলিত আছে। যারা রাজনীতির চর্চা করে, সংগঠন করে, নেতৃত্ব দেয় তাদের অবস্থা হলো পাঁচ-দশ-পনেরো বছর ইনভেস্ট করো, ক্ষমতায় আসতে পারবে। সব ইনভেস্ট সুদে-আসলে উসুল করে নেবে। যারা রাজনীতি করে তাদের সবার ইচ্ছা থাকে পার্টি ক্ষমতায় গেলে সব উসুল করে নেব। প্রশ্ন হলো, পার্টি ক্ষমতায় গেলে যেসব উসুল করবা, এই সম্পদ তোমাকে কে দেবে? কোথাও থেকে বৈধ উপায়ে দেওয়ার কেউ নাই। উপায় একটাই, রাষ্ট্রের সম্পদ চুরি করতে হবে, জনগণের সম্পদ চুরি করতে হবে, মানুষের অধিকার হনন করতে হবে।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন- কেন্দ্রীয় অভিভাবক পরিষদের সদস্য মাওলানা শেখ ফরিদ আহমদ খান, কেন্দ্রীয় সদস্য মাওলানা জালাল উদ্দীন আহমদ, সিলেট মহানগর সভাপতি গাজী রহমতুল্লাহ, মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি মুফতি হাবিবুর রহমান কাসেমি, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুফতি হেলালুর রহমান হেলালসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
মন্তব্য করুন