নরসিংদীতে ডিস ও ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যুবদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর (২৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে মাধবদী থানার শেখেরচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নরসিংদী সদর থানার ওসি মোহাম্মদ এমদাদুল হক বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন।
নিহত আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর (২৫) মাধবদী থানার পৌলাণপুর এলাকার মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে। তিনি আহত বখতিয়ার হোসেনের ডিস ও ইন্টারনেট ব্যবসায় কর্মচারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অপরদিকে আহত বখতিয়ার হোসেন মেহেরপাড়া ইউনিয়ন তাঁতীদলের সভাপতি এবং মেহেরপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ইফতেখার হোসেন ইফতির ছোট ভাই।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেখেরচর এলাকায় সানফ্লাওয়ার গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে মেহেরপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ইফতেখার হোসেন ইফতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেনের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জেরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যুবদল নেতা আকরামসহ আরও বেশকিছু লোকজন তাঁতীদল নেতা বখতিয়ারের ওপর গুলি চালায়। এতে বখতিয়ার ও তার ব্যবসার কর্মী আনোয়ার আহত হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে আনোয়ারের মৃত্যু হয়। অপরদিকে বখতিয়ারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
আহত বখতিয়ার হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে শেখেরচর-বাবুরহাট বাজারে এক গ্রাহকের ইন্টারনেট সংযোগের কাজ করছিল মনজুর। আমি বাজারে বেডশিডের কাপড় কিনতে গিয়েছিলাম। এ সময় মনজুর আমাকে দেখে বলেন আপনিও আসছেন নাকি। ঠিক ওই সময় আকরামসহ ৫-৬ জন লোক সেখানে যায়। আমাকে দেখেই আকরাম বলে পাইছিরে বলেই গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় আমার বাম হাতের আঙুলে এবং মনজুরের পেটে গুলি লাগে। পরে মানুষ জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়। আমাদের উদ্ধার করে প্রথমে মাধবদীর প্রাইম হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মনজুর মারা যায়।
নিহত মনজুরের স্বজনরা বলেন, দুই মাস আগে বখতিয়ারের কাছ থেকে চাকরি ছেড়ে সিগারেট কোম্পানিতে চাকরি নিয়েছিল মনজুর। তারা চার ভাই ও দুই বোন। মনজুরের দুই বছরের এক ছেলে রয়েছে। চাকরির টাকায় চলতে হিমশিম খাওয়ায় বখতিয়ারের সঙ্গে মাঝে মধ্যে ওয়াইফাই ও ডিশ সংযোগের কাজ করতেন মনজুর মিয়া।
নরসিংদীর পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হান্নান কালবেলাকে বলেন, বখতিয়ার ও ইফতেখার দুই ভাই। ঝুট ব্যবসা নিয়েই তাদের সঙ্গে আকরামের ঝামেলা চলছিল। মূলত সেখানকার সানফ্লাওয়ার গার্মেন্টসের ঝুট কেনাকে কেন্দ্র করেই মূল সমস্যা ছিল বলে জানতে পেরেছি। এরই জেরে ৩ দিন আগেও বখতিয়ার ও ইফতির এক ভাইকে আকরাম মারধর করেছে। আমরা ধারণা করছি, আকরাম বা তার লোকজনের গুলিতে ছেলেটির মৃত্যু হয়েছে। তবে যে মারা গেছে তার সঙ্গে কোনো ধরনের শত্রুতা বা মিত্রতা নেই। তিনি বখতিয়ারের ডিস এবং ইন্টারনেটের ব্যবসার কর্মচারী ছিলেন।
নরসিংদী সদর থানার ওসি মোহাম্মদ এমদাদুল হক কালবেলাকে জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন