নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:৫৪ এএম
আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪৫ এএম
অনলাইন সংস্করণ

লাভের বদলে কিস্তি পরিশোধ নিয়েই দুশ্চিন্তায় আলু চাষিরা

নওগাঁর নিয়ামতপুরে আলু তোলার দৃশ্য। ছবি : কালবেলা
নওগাঁর নিয়ামতপুরে আলু তোলার দৃশ্য। ছবি : কালবেলা

দুই মাস আগে বাজারে প্রতি কেজি আলুর দাম উঠেছিল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত। লাভের আশায় এবার নওগাঁর নিয়ামতপুরে গত বছরের চেয়ে তিনগুণ বেশি জমিতে আলু চাষাবাদ করেছেন কৃষকরা। লাভের বদলে ধারদেনা ও এনজিওর কিস্তি পরিশোধ নিয়েই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আলুচাষি। এখন বাজারে নতুন আলু আসতে শুরু হয়েছে। এতেই বাজারে আলুর দাম কমে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আলুচাষিরা তাদের উৎপাদিত আলু কম দামেই বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, নিয়ামতপুর উপজেলায় গত বছর আলুর চাষাবাদ হয়েছে ১ হাজার ২৩০ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে উপজেলায় আলুর আবাদ বেড়ে ৩ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে আলু চাষাবাদ হয়েছে। আলু আবাদে রোগ ও পোকামাকড় প্রতিরোধে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।

নিয়ামতপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আলুচাষির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লাভের আশায় এবারও চাষিরা দেশি জাতের আগাম আলু চাষ করেছেন। প্রতি বছর অক্টোবরের শেষে আলু রোপণ করে জানুয়ারিতে বাজারে বিক্রি করা হয়। এবার গত বছরের চেয়ে আলুর বীজের দাম বেশি হওয়ায় আলু আবাদে খরচ দ্বিগুণ বেড়েছে; কিন্তু আগাম জাতের সেই আলু বিক্রি করে এখন লোকসানে পড়েছেন কৃষকরা।

উপজেলার শ্রীমন্তপুর এলাকার আলুচাষি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমি ১ বিঘা জমিতে দেশি জাতের আলু আবাদ করেছি। আলু তোলার পর বাজারে ৮০০ টাকা মণ ধরে আলু পাইকারি দিয়েছি। এতে আমার ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। নিজের পরিশ্রম তো বাদই দিলাম।’

আরেক আলুচাষি মাইনুল ইসলাম বলেন, এক বিঘা জমি ২০ হাজার টাকায় কট নিয়েছি। ৭৫ টাকা কেজি দরে আলুর বীজ কিনে আলু আবাদ করেছি। জমি থেকে আলু তোলার পর ৬০০ টাকা মণ ধরে পাইকারি দিয়েছি। গত বছরের তুলনায় এবার আলুর বীজ, সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মূল্য বেড়েছে। আলু চাষ করে আমার অনেক লোকসান হয়েছে। সামনে বছর থেকে আলু চাষাবাদ ছেড়ে দেব।

ভাবিচা ইউনিয়নের আলুচাষি আব্দুল মতিন বলেন, এনজিও থেকে কিস্তির টাকা তুলে আগাম জাতের আলু দুই বিঘা জমিতে চাষ করেছি। এখন বাজারে আলুর দাম কম। এখন ক্রেতার অভাবে আলু বিক্রি করতে পারছি না। প্রতিদিনই আলুর দাম কমছে। আলু বিক্রি করে উৎপাদনের খরচ তোলা যাবে না। এদিকে আবার আগাম আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করা যায় না। এখন দুশ্চিন্তায় রয়েছি, আলু বিক্রি করে তো আর এনজিওর ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব নয়।

নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, চলতি মৌসুমে আলুর বীজের দাম চওড়া হওয়ায় আলু উৎপাদনের খরচটাও একটু বেশি পড়ছে। এখন বাজারে নতুন আলুর দাম কম। এতে কৃষক ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। তবে উৎপাদন ভালো হওয়ায় কৃষকদের লোকসান হবে না বলে জানান তিনি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করছে যুবদল : নয়ন

বাধার মুখে উদীচীর সম্মেলন পণ্ড

নবজাতককে নদীতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ মায়ের বিরুদ্ধে

ঢাকা কলেজ ও বাঙলা কলেজের ১০ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

ট্রাম্পের অভিষেকের আগেই চুক্তি করছে ইরান-রাশিয়া

‘আওয়ামী লীগকে হিটলারের নাৎসি বাহিনীর মতো নিষিদ্ধ করতে হবে’

অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর দিকে তাকিয়ে ইইউ

ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেলেন না মোদি

‘জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মজলুম দল’

ইমনের নতুন ব্যান্ড বেঙ্গল সিম্ফনি

১০

মতিঝিলে আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে হাসপাতালে ঢাবি উপাচার্য

১১

পৃথক বিবৃতিতে ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদ / বাংলাদেশের নাম পরিবর্তনের অধিকার অন্তর্বর্তী সরকারের নেই

১২

রাস্তা নিয়ে দ্বন্দ্বে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১৮

১৩

দুই পক্ষের বিবাদ মিটাতে গিয়ে প্রাণ গেল ইউপি সদস্যের

১৪

পাহাড়ি ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় উদীচীর বিবৃতি

১৫

প্রথমবারের মতো দেশে পালিত হবে ‘বিশ্ব মেছোবিড়াল দিবস’

১৬

চাঁদাবাজির মামলায় আ.লীগ নেতা রফিকুল গ্রেপ্তার

১৭

যেসব কারণে আগুন নেভাতে দেরি, জানাল ফায়ার সার্ভিস

১৮

‘ভ্যাট, গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র’

১৯

‘আগা খাঁন গোল্ড কাপ গলফ টুর্নামেন্ট-২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান 

২০
X