বগুড়ার শাজাহানপুরে মাদ্রাসাপড়ুয়া এক শিশু শিক্ষার্থীকে (১২) বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ চারজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। এরইমধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ একই মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত (১৩) এক শিশু শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার রহিমাবাদ সি-ব্লক এলাকায় অবস্থিত দারুসুল কোরআন একাডেমি আবাসিক মাদ্রাসায়।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, হারুনুর রশিদ নামের এক ব্যক্তি তার ১২ বছর বয়সী শিশুপুত্রকে প্রায় এক বছর আগে দারুসুল কোরআন একাডেমিতে (আবাসিক) ভর্তি করান। গত তিন মাস আগে ওই শিশু শিক্ষার্থী নিজ বাড়িতে রাতের খাবার খেয়ে মাদ্রাসায় দেরিতে ফেরেন। সেই অপরাধে তার শোবার জায়গা মাদ্রাসা ভবনের দ্বিতীয়তলা থেকে নিচ তলায় নামিয়ে দেন শিক্ষক আবু সাইদ (৩২)।
এতে বাধ্য হয়ে নিচ তলাতেই থাকতে হয় ওই শিশু শিক্ষার্থীকে। একপর্যায়ে গত ৫ অক্টোবর রাত আড়াইটার দিকে মাদ্রাসার দুই শিক্ষার্থী (১৪) ওই শিশুকে বলাৎকার করে। এতে শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং সহপাঠীদের অত্যাচার থেকে বাঁচতে ঘটনার বিষয়ে শিক্ষক আবু সাইদকে জানায়।
কিন্তু শিক্ষক আবু সাঈদ নিপীড়নকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো অভিযোগকারী শিক্ষার্থীকেই মানসিক চাপে রাখেন। সেই সঙ্গে বিষয়টি কাউকে না জানাতে নানা রকম ভয়ভীতি দেখান। এ সুযোগে অপকর্মে জড়িতরা পরবর্তীতে একাধিকবার শিশুটিকে বলাৎকার করে। ঘটনাটি জানতে পেরে তা এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বলাৎকারের সুযোগ নেয় অপর এক সহপাঠী (১৩)।
এভাবে গত ৫ অক্টোবর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনের শিকার হওয়ায় শিশুটি শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
ছেলের বিষণ্নতা দেখে বাবা-মা তাকে জিজ্ঞাসা করে এবং বলাৎকারের ঘটনা জানতে পারেন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক আবু সাঈদকে অনুরোধ করেন শিশুটির বাবা হারুনুর রশিদ। কিন্তু জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে তিনি তালবাহানা করেন এবং অভিভাবকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। অবশেষে গত ১২ জানুয়ারি শাজাহানপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন হারুনুর রশিদ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদ করিম জানান, গত বুধবার রাত ৯টার দিকে অভিযান চালিয়ে এক শিক্ষার্থীকে (১৩) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শাজাহানপুর থানার ওসি ওয়াদুদ আলম জানিয়েছেন, বলাৎকারের ঘটনায় এক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে বৃহস্পতিবার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন