বরিশালে বিদেশে মানব পাচারকারী চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ। এ সময় পাচারের জন্য আটকে রাখা এক কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের দক্ষিণ জোনের উপপুলিশ কমিশনার রুনা লায়লা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাত আড়াইটার দিকে বরিশাল নগরীর ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দপ্তরখানা এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ভিকটিম উদ্ধার এবং ভাটিখানা এলাকা থেকে পাচার চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়ারা হলেন বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার পাতারহাট গ্রামের সুইটি (২৭), নোয়াখালীর লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা আল আমিন (২৮) ও শরীয়তপুরের জুঁথি বেগম (২৪)।
এ ছাড়া উদ্ধার হওয়া কিশোরী সাদিয়া আক্তার তানহা (১৩) বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব হবিনগর এলাকার বাসিন্দা। সে তার নানা বাড়িতে থাকে।
সংবাদ সম্মেলনে উপপুলিশ কমিশনার রুনা লায়লা জানান, গত ১ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটার দিকে কিশোরী তানহা তার মায়ের খালা নারগিসের বাড়ি থেকে হবিনগর গ্রামে নানা বাড়ির উদ্দেশে বের হয়। শায়েস্তাবাদ খেয়াঘাট সংলগ্ন জনৈক বেল্লাল হাওলাদারের চায়ের দোকানে সামনে পৌঁছালে পাচারকারী চক্রের সদস্য সুইটি ও জুঁথি বেগম তাকে ফুসলিয়ে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে অপহরণ করে।
পরে তাকে কোতোয়ালি থানাধীন নগরীর দপ্তরখানা এলাকায় জনৈক খালেক মিয়ার বাসার দ্বিতীয় তলায় আটকে রাখে। গত ২ জানুয়ারি পতিতাবৃত্তির জন্য দুবাই পাচারের উদ্দেশে ঢাকায় নিয়ে ভুয়া ভোটার আইডি কার্ড তৈরি প্রক্রিয়া শুরু করে। এ ছাড়া শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয় কিশোরীকে।
এদিকে, কিশোরী নিখোঁজের ঘটনায় গত ৯ জানুয়ারি মহানগরীর কাউনিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তার স্বজন জান্নাত (২৮)। এর সূত্র ধরে অভিযান পরিচালনা করে বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে দপ্তরখানার ওই বাসা থেকে কিশোরী উদ্ধার করা হয়। পরে নগরীর ভাটিখানা এলাকা থেকে অপহরণ চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাছাড়া গ্রেপ্তাকৃত তিনজন অপরাধের প্রাথমিক সত্যতা স্বীকার করেছে।
এ ঘটনায় কাউনিয়া থানায় মানব পাচার অপরাধ আইনে একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনজনকেই আদালতের মাধ্যমে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। চক্রের সঙ্গে আরও কোনো সদস্য জড়িত রয়েছে কিনা সে বিষয়টি তদন্ত করে তাদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন উপপুলিশ কমিশনার রুনা লায়লা।
মন্তব্য করুন