অনলাইনে পরিযায়ী পাখির মাংস বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ফেসবুকে লাইভ করায় দেলোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সুনামগঞ্জ বন আদালতে মৌলভীবাজারের সদর বন কর্মকর্তা মো. গোলাম সারোয়ার বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
আদালতের নাজির এনামুল হক জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জ বন আদালতে এটিই প্রথম পাখি হত্যার মামলা। বন আদালতের বিচারক, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামলাটি গ্রহণ করেছেন।
মামলার বাদী গোলাম সারোয়ার জানান, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনের ২০১২-এর ৩৮ (২) ধারায় তিনি এই মামলা করেছেন। মামলায় তিনি আদালতকে জানিয়েছেন, অবৈধভাবে অতিথি পাখি শিকার করে নিজের দখলে রেখেছেন তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে দেলোয়ার হোসেন। পরে অনলাইনে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ‘হাওরপাড়ের মানুষ’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট দেওয়া হয়েছে। এমন নির্মম দৃশ্যের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেখে সরেজমিনে এসে অপরাধীকে ধরার চেষ্টা করলেও, সে পালিয়ে যাওয়ায় আটক করে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। এজন্য তারা আদালতে মামলা করেছেন।
এই অবস্থায় তার বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২-এর ৩৮ (২) ধারায় অপরাধ বিবেচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করেন গোলাম সারোয়ার।
বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা জানান, বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ অনুযায়ী পাখি নিধনের সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছর জেল, এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডও হতে পারে। একই অপরাধ ফের করলে শাস্তি ও জরিমানা দ্বিগুণের বিধানও রয়েছে।
পাখি শিকারিদের তৎপরতা দুঃখজনক মন্তব্য করে তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তি পরিযায়ী পাখির মাংস ও দেহের অংশ সংগ্রহ বা দখলে রাখলে অথবা বেচা-কেনা করলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে।
মন্তব্য করুন