‘সুদের টাকা’ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গভীর রাতে রাজশাহীতে এক যুবদল নেতার বাড়িতে আগ্নেয়াস্ত্রসহ অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন ওই যুবদল নেতার বাবা।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাত দেড়টার দিকে সালাহউদ্দিন মিন্টুর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম মো. আলাউদ্দিন (৬০)। তার বাড়ি রাজশাহীর পবা উপজেলার ভুগরইল গ্রামে। নিহতের ছেলে সালাহউদ্দিন মিন্টু নওহাটা পৌর যুবদলের সাবেক সদস্য।
জানা যায়, সালাহউদ্দিন মিন্টুর বাড়িকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করা হয়। দরজা ভেদ করে একটি গুলি বাড়িতে ঢোকে। এতে আহত হন মিন্টুর বাবা আলাউদ্দিন। গুলিটি তার কোমরে লেগেছিল। রাতেই তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিকাল ৩টার দিকে তিনি অপারেশন থিয়েটারে মারা যান। তবে কারা হামলা চালিয়েছে সেই বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি।
নিহতের ছেলে সালাহউদ্দিন মিন্টু কালবেলাকে বলেন, তাদের এলাকায় দুপক্ষের টাকা-পয়সা নিয়ে একটা বিরোধ ছিল। এর মীমাংসার জন্য রাতে উভয়পক্ষ রাজশাহীর এয়ারপোর্ট থানায় বসেছিল। একপক্ষের একজন আমার সম্পর্কে ‘ছোট ভাই’। এ জন্য আমিও গিয়েছিলাম। বিষয়টি রাতেই থানায় মীমাংসাও হয়ে যায়। এরপর বাড়ি ফিরি। এর আধাঘণ্টা পরই আমার বাড়ি লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করা হয়।
এ ঘটনায় জড়িত বলে ভুগরইল শিহাবের মোড় এলাকার কয়েকজনের নাম জানিয়ে মিন্টু বলেন, তারা ১০-১২ জন এসেছিল। সবাই টোকাই, মাদকাসক্ত। তারা গুলিবর্ষণ করেছে।
তবে একটি সূত্র বলছে, সুদের টাকা নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। যারা হামলা চালিয়েছে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
এয়ারপোর্ট থানার ওসি ফারুক হোসেন কালবেলাকে জানান, দুটি পক্ষ থানায় একটি আপস-মীমাংসার জন্য বসেছিল। সেই মীমাংসা সালিশে নিহত ব্যক্তির ছেলে যুবদল নেতা পিন্টুও ছিলেন। তবে বিষয়টি থানাতেই মীমাংসা হয়েছে। আমি যতটুকু জানি, থানায় মীমাংসিত ঘটনার সঙ্গে গুলিবর্ষণের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এটি ভিন্ন ঘটনা। তবে যেই বাড়িতে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে সেটি পড়েছে শাহমখদুম থানা এলাকায়। শাহমখদুম থানা-পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।
জানতে চাইলে শাহমখদুম থানার ওসি মাহবুব আলম বলেন, হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারে আলাউদ্দিন মারা গেছেন বলে শুনলাম। এখন পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি।
কারা হামলা চালিয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যতটুকু শুনেছি- সুদের টাকার নিয়ে আগে থেকেই ওই এলাকায় একটা দ্বন্দ্ব ছিল। মূলত এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই হামলার ঘটনা ঘটতে পারে। যারা হামলা চালিয়েছে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি তারা একই দলের। তবে বিস্তারিত তদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব হচ্ছে না।
এ পর্যন্ত কেউ আটক হয়েছেন কি না জানতে চাইলে ওসি বলেন, আমরা তদন্তের স্বার্থে এটা বলছি না।
মন্তব্য করুন