গাজীপুরের শ্রীপুরে এক পোশাক শ্রমিককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে যুবকের প্রেমিকার সাবেক প্রেমিকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবককে আটক ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে শ্রীপুর পৌরসভার ভাংনাহাটি গ্রামে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। শ্রীপুর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন।
নিহত সৈকত (১৯) বগুড়ার সারিয়াকান্দি থানার হাওরাখালি চাঁন মিয়ার ছেলে। তিনি শ্রীপুর পৌরসভার ভাংনাহাটি গ্রামের এমএইচসি এ্যাপারেলস্ লিমিটেড নামে কারখানার কোয়ালিটি ইন্সপেক্টর পদে চাকরি করতেন। আর আটক আপেল মাহমুদ আমিনুর (১৮) বগুড়ার শিবগঞ্জ থানার টেবাগাড়ি গ্রামের খোকা মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া থেকে চাকরির সন্ধানে গিয়ে রোজিনার সঙ্গে ৬-৭ মাস আগে পরিচয় হয় অভিযুক্ত আমিনুরের। পরিচয় থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অপরদিকে, একই কারখানায় চাকরির সুবাদে নিহত সৈকতও রোজিনা সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। সৈকত-রোজিনার এ প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিতে না পেরে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে সৈকত কারখানা থেকে ভাড়া বাড়িতে যাওয়ার সময় সিআরসি মোড় থেকে মোল্লা বাড়ি সড়কের মির্জা আলী জামে মসজিদের সামনে পৌঁছলে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে আমিনুর। পরে স্থানীয়রা সৈকতকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাইদা ইমরোজ ইমা বলেন, সৈকতকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি শ্রীপুর থানা পুলিশে খবর দেওয়া হয়। নিহতের শরীরে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
শ্রীপুর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল কালবেলাকে বলেন, রোজিনার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল ঘাতক আমিনুরের। সম্প্রতি আমিনুরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের ইতি টেনে সৈকতের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে রোজিনা। বিষয়টি ঘাতক আমিনুর মেনে নিতে না পেরে সৈকতকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার স্থানীয় একটি বাজার থেকে তিনশ টাকায় ছুরি কিনে সন্ধ্যার পর থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। রাত ৯টার দিকে নিহত সৈকত ভাড়া বাড়িতে যাওয়ার পথে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা আমিনুর প্রথমে সৈকতের ঘাড়ে আঘাত করে। পরে শরীরে একাধিক জায়গায় উপর্যুপরি ছুরি দিয়ে আঘাত করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়। ঘটনার পরপরই পুলিশের একাধিক টিম অভিযান চালিয়ে এক ঘণ্টার মধ্যে ভাংনাহাটি এলাকা থেকে ঘাতক আমিনুরকে আটক করে। নিহতের স্বজনদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন