ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীর নহনা খালের ওপর নির্মিত স্লুইস গেটটি কাজে আসছে না কৃষকদের। তারা জানায়, নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে যাওয়ায় গত পাঁচ বছর ধরে স্লুইস গেটটি অকেজো রয়েছে। ফলে কৃষিজমিতে সেচ দিতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের। অথচ স্লুইস গেটটিকে ব্যবহার উপযোগী করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কারও কোনো পদক্ষেপ নেই।
ঠাকুরগাঁও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে উপজেলার বড়বাড়ি ইউনিয়নের জাউনিয়া গ্রামের নহনা খালের ওপর ২ কোটি ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে স্লুইস গেটটি নির্মাণ করা হয়। খরা মৌসুমে কৃষিজমিতে সেচ সুবিধা দিতেই এটি নির্মাণ করেছিল এলজিইডি। শুরুতে কিছুদিন এটা কাজ করেছে। তবে পরে নহনা খালটির গতিপথ পরিবর্তন হয়ে যাওয়ায় গেটটি অকেজো হয়ে পড়ে। এরপর থেকে প্রায় পাঁচ বছর ধরে কাজে আসছে না গেটটি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গেটটি থেকে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গেছে। এটি অকেজো হওয়ায় এর আশপাশে বসে মাদকসেবীদের আড্ডা। অথচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কারো কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই এ বিষয়ে।
স্থানীয় কৃষক সফিউল আলম জানান, আমাদের উপকারের জন্য এটি করা হয়েছে। শুরুতে আমরা উপকার ভোগ করেছি। সরকার কোটি টাকা খরচ করে খরা মৌসুমে সেচের জন্য করেছেন। অথচ এটি এখন কৃষকের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি সংস্কার করা জরুরি, এতে আমরা উপকৃত হব।
কলেজশিক্ষার্থী আবু নাঈম বলেন, সন্ধ্যা নামলে এখানে বখাটে ছেলেদের আসর জমে। মাদকসেবিদের আড্ডাখানা পরিণত হয়েছে এটি। গেটির যে যন্ত্রাংশ রয়েছে সেগুলো চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এসব নিয়ে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
ছোট সিংগিয়া পানি ব্যবস্থপনা সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, আমাদের সমিতির ব্যবস্থাপনায় একটি গেট ও আরেকটি ওয়ার করা হয়েছে। শুরুতে আমাদের কৃষকদের জন্য এটি উপকার হলেও এখন কোনো কাজে আসছে না। প্রায় দুই বছর ধরে আমরা এলজিইডির সঙ্গে এটির সংস্কার নিয়ে কথা বলছি। পুনরায় মেরামত হলে আমাদের কৃষকদের কাজে আসবে এটি।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের বালীয়াডাঙ্গী উপজেলার প্রকৌশলী মাইনুল ইসলাম কালবেলাকে জানান, স্লুইস গেটটি এখন কৃষকদের জন্য সেচ সুবিধায় আসছে না। গত বছরে আমরা এটির স্টিমেট পাঠিয়েছি। এ অর্থ বছরেও প্রাক্কলন পাঠানো হয়েছে। বছরের মধ্য ভাগে মেরামত হবে বলে আশা করছি।
ঠাকুরগাঁও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন বিশ্বাস বলেন, গেটটির বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা কৃষকদের সেচ সুবিধা পেতে দ্রুত সময়ের মধ্যে পুনঃসংস্কারের কাজ শুরু করব।
মন্তব্য করুন