নীলফামারীতে সোনালী ব্যাংকের একটি উপশাখায় ডাকাতির চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। পরে তারা নগদ টাকা-পয়সা না পেয়ে আসবাবপত্র ভাঙচুর ও ব্যাংকে অগ্নিসংযোগ করে পালিয়ে যায়।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১২টার দিকে জেলা সদরের সংগলশী কাজীরহাট এলাকায় সোনালী ব্যাংক উত্তরা ইপিজেট উপশাখায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ব্যাংকটির নিরাপত্তা কর্মীকে মারধর ও হাত পা বেঁধে রাখে দুর্বৃত্তরা।
জানা যায়, দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে প্রয়োজনীয় নথিপত্র, আসবাবপত্রসহ ব্যাংক ব্যবস্থাপক কক্ষ ও নিরাপত্তা প্রহরী কক্ষ ভস্মীভূত হয়েছে। রাত দুইটার দিকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দমকলবাহিনীর সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় ব্যাংকের উপশাখা ব্যবস্থাপক মো. আব্দুল মোনায়েম বাদী হয়ে রোববার (১২ জানুয়ারি) সকালে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অপরদিকে মারধরে আহত ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মী মাসুদ রানা (২৪) নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, কয়েকদিন আগে ব্যাংকের ওই শাখায় একটি নতুন ভোল্ট স্থাপন করা হয়। শনিবার রাতে ডাকাতির উদ্দেশ্যেই সেখানে প্রবেশ করে দুর্বৃত্তরা। পরে ভেতরে তল্লাশি ও ভাঙচুর করে নগদ টাকা-পয়সা না পেয়ে ব্যাংককে অগ্নিসংযোগ করে বলে ধারণা করছেন তারা।
নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ব্যাংকের আহত নিরাপত্তা কর্মী মো. মাসুদ রানা ঘটনার বর্ণনা দিয়ে কালবেলাকে বলেন, ‘শনিবার রাত ১১টায় ডিউটিতে যোগ দেই। রাত সাড়ে ১২টার দিকে শরীর খারাপ লাগছিল। ঘুম না আসায় ব্যাংকের নিচে পান খাওয়ার জন্য যাই। এজন্য ব্যাংকের মূল ফটকে তালা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করি। আমি ফিরেই বাথরুমে যাই। সেখান থেকে বের হতেই আমার মাথায় আঘাত করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তিনজনকে দেখতে পাই। সবার মাথায় টুপি ও মাফলার দিয়ে মুখ ঢাকা ছিল।
মো. মাসুদ রানা আরও বলেন, ডাকাতরা আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে লকারের চাবি নিয়ে চায়। এরপর টাকার জন্য অনেক খোঁজাখুঁজি করে। তারা ব্যাংকের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি ও ভাঙচুর করে। টাকা না পেয়ে আমার হাত-পা বেঁধে সিঁড়ির নিচে ফেলে দিয়ে ব্যাংকের ভেতর অগ্নিসংযোগ করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
দুর্বৃত্তরা মূল ফটকের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেছে বলে জানান তিনি।
সোনালী ব্যাংক উত্তরা ইপিজেট উপশাখার ব্যবস্থাপক মো. আব্দুল মোনায়েম বলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে ব্যাংকের ভেতর আগুন দেওয়ার খবর শুনে ভবন মালিক মো. রফিকুল ইসলাম শাহ রাত দুইটার দিকে আমাকে ফোনে জানায়। বিষয়টি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেই। পরে ফায়ার সার্ভিস ও টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আমার (ব্যবস্থাপক) ও গার্ড রুমের আসবাবপত্র ও কাগজপত্র পুড়ে যায়। তবে ওই শাখায় কোনো টাকা পয়সা ছিল না। এ ঘটনায় বাদী হয়ে রোববার সকালে নীলফামারী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’
নীলফামারী সদর থানার ওসি এম আর সাঈদ বলেন, ‘ব্যাংকটিতে ডাকাতির কোনো ঘটনা ঘটেনি। তারা ডাকাতির বিষয়ে অভিযোগও করেনি। ব্যাংকে আগুন লাগার বিষয়ে অভিযোগ করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’
মন্তব্য করুন