মেয়াদ ফুরানোর আড়াই বছর পরও শেষ হয়নি কুড়িগ্রামে রাজারহাটের বালাটারী গ্রামের সেতুর নির্মাণ কাজ। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের হাজারো মানুষের। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানালেন, ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে নির্মাণে অতিরিক্ত সময় লাগছে।
রোববার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুতে ওঠানামার জন্য কোনো রাস্তা বা সংযোগ সড়ক নেই। মই দিয়ে সেতুতে উঠতে হচ্ছে স্থানীয়দের। এভাবেই প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন শিক্ষার্থীসহ শত শত মানুষ।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চাকিরপশার ও নাজিমখান এবং বিদ্যানন্দ ইউনিয়নসহ আশপাশের প্রায় ১০টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরে ২০১৯-২০ অর্থবছরে রাজারহাট উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের বালাটারী থেকে মানাবাড়ি কালিরহাট মরা তিস্তা বিলের ওপর সেতুটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটির কাজ পায় কুড়িগ্রামের মেসার্স শীতল কনস্ট্রাকশন। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে কাজ শেষ হওয়ার কথা। তবে, এখনো কাজ বাকি রয়েছে অনেক।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল বারি বলেন, এটা সেতু নয়, যেন পাহাড়ি সিঁড়ি। এই সেতু দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে শিশু শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাওয়ার সময় বেশ কয়েকবার দুর্ঘটনায় পড়ে। বৃষ্টির সময় সিঁড়িগুলো খুবই পিচ্ছিল অবস্থায় থাকে। পা ফসকে পড়ে গেলেই মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দা ফখরুল ইসলাম বলেন, আমাদের বালাটারী গ্রামের ব্রিজের নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার চার বছর চলছে। এখন পর্যন্ত ৪০% কাজও শেষ হয়নি। কবে আমাদের ব্রিজ হবে। এলাকার মানুষ চরম ভোগান্তিতে রয়েছে। চাকিরপশার ও নাজিমখান এবং বিদ্যানন্দ ইউনিয়নসহ আশপাশের প্রায় ১০টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের পথ এই বিলের উপর দিয়ে। তাদের প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। উৎপাদিত বিভিন্ন কৃষিপণ্য বিভিন্ন বাজারে নিয়ে কেনাবেচা করতে পারছেন না। এখন যে অবস্থা ব্রিজের কাজ আদৌ হবে কি না বা মৃত্যুর আগে দেখতে পাব কিনা তাও ভাবনার বিষয়।
কলেজ শিক্ষার্থী আরিফ বলেন, গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে বিলের পাশ দিয়ে অস্থায়ী রাস্তা তৈরি করে চলাচল করছে। বর্ষা মৌসুমে এ রাস্তায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। আমরা নিরুপায় হয়ে কষ্ট করে চলাচল করছি। আমাদের এই সেতুটি দ্রুত নির্মাণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, আমি রাজারহাট উপজেলায় আসার আগে সেতুর কাজ শুরু হয়েছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে সেতুটি নির্মাণে অতিরিক্ত সময় লাগছে। তবে কাজ চলমান আছে। এ বছরই কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।
মন্তব্য করুন