ফরিদপুরের কানাইপুরে খাজা বাহিনীর হাতে নৃশংস হত্যার শিকার যুবকের লাশ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। এ সময় বিক্ষুব্ধরা ঘটনার জন্য দায়ী করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহ মুহাম্মদ আলতাফ হোসেন ও তার ভাই খায়রুজ্জামান খাজাসহ জড়িত আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কানাইপুর বাজার এলাকায় এ বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি করেন তারা।
নিহত ওবায়দুর সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের ঝাউখোলা গ্রামের বিল্লাল খানের ছোট ছেলে। তিনি পেশায় কৃষি ও কাঠমিস্ত্রির কাজ করতেন। তার পাঁচ মাসের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে।
শনিবার বিকেলে নিহত ওবায়দুরের লাশ এলাকায় আনলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। এ সময় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে মহাসড়কে বসে পড়েন তারা। এ সময় সড়কের দুপাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে থানা-পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন স্থানীয়রা।
এর আগে গতকাল শুক্রবার ওবায়দুর খানকে (২৮) তুলে নিয়ে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এ সময় তার দুই চোখে পেরেক ঢুকিয়ে খোঁচানো হয় এবং পা ভেঙে দেয় দুর্বৃত্তরা। রাত ৯টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তিনি।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাবেক মন্ত্রী আবদুর রহমানের ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা খাজা এলাকায় এক শীর্ষ সন্ত্রাসী মাদকের গডফাদার। নিজ নামে এলাকায় রয়েছে একটি বাহিনী, যা খাজা বাহিনী নামে বেশ পরিচিত। একটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি হয়েও তৎকালীন সময়ে আবদুর রহমানের হস্তক্ষেপে খালাস পান খাজা। এরপর হয়ে ওঠেন আরও বেপরোয়া। ৫ আগস্টের পরে জেলা বিএনপির এক নেতার ঘনিষ্ঠ পরিচয়ে পুনরায় ত্রাসের রাজত্ব শুরু করেন। তার কথা না শুনলে এবং তার অনুগত হয়ে না চললে হুমকি-ধমকিসহ করা হয় নির্যাতন।
নিহতের বাবা বিল্লাল খান কালবেলাকে বলেন, ‘আমরা নায়াব আপার (বিএনপির কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক, চৌধুরী নায়াব ইউসুফ) লোক। ইছা ভাইয়ের (জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছা) মিটিংয়ে যাওয়ার জন্য খাজা আমাদের বলে যায়। ওই মিটিংয়ে না যাওয়াতে আমার ছেলেডারে ধইরে মাইর্যা ফেলাইছে। আমি এই হত্যার বিচার চাই। ওর (খাজা) ফাঁসি না হলে আরও মানুষ মরবে।’ এ সময় ওবাইদুরের বাবা তার মোবাইল দিয়ে খায়রুজ্জামান খাজার ছবি দেখিয়ে বলেন, ‘ও (খাজা) আর আলতাব চেয়ারম্যান অর্ডার দিয়েই আমার ছেলেকে মারছে।’
এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানার ওসি মো. আসাদউজ্জামান কালবেলাকে বলেন, যতটুকু জেনেছি ওবায়দুর পুলিশের ইনফর্মার হয়ে কাজ করার কারণে তার ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আটক করতে আমাদের অভিযান চলছে।
মন্তব্য করুন