ছোটবেলা থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বেড়ে ওঠা সোনিয়া আক্তার এ পর্যন্ত নিজের অদম্য ইচ্ছাশক্তি নিয়ে পড়ালেখায় এগিয়ে যেতে এ যাবৎকালের তার অংশগ্রহণ করা সব পরীক্ষা দিয়েছেন পায়ে লিখে। বর্তমানে তিনি চাঁদপুরের মতলব উত্তরের নিশ্চিন্তপুর ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) তার পড়ালেখায় এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি পায়ে লিখে পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সোনিয়া আক্তার কালবেলাকে বলেন, আমার জন্ম থেকেই দুই হাত না থাকায় সম্পূর্ণ পা দিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছি। আর এভাবেই পরীক্ষা দিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেছি। আমার বাড়ি পার্শ্ববর্তী কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের পদুয়া গ্রামে। আমি শ্রীরায়েরচরে অবস্থিত সিরাজুল ইসলাম মেমোরিয়াল হাইস্কুল থেকে ২০২৪ সালে এসএসসি পাস করেছি।
সোনিয়া আক্তার আরও বলেন, আমি এসএসসিতে মানবিক বিভাগ থেকে পাস করেছি। বর্তমানে নিশ্চিন্তপুর ডিগ্রি কলেজে মানবিক বিভাগে অধ্যয়ন করছি। পা দিয়ে শুধু পড়ালেখাই নয় বরং বাসায় রান্নাবান্নার জন্য সবজি কাটাকুটিসহ নিজেই রান্না করতে পছন্দ করি। আমার অদম্য ইচ্ছাশক্তি নিয়ে পড়ালেখায় এগিয়ে যেতে এবং আলোকিত মানুষ হতে সবার দোয়া চাই।
এ বিষয়ে সোনিয়া আক্তারের বাবা শাহীন প্রধান কালবেলাকে বলেন, আমি ছোটখাটো ব্যবসা করি। সোনিয়া কিছুদিন আগেই এইচএসসি প্রথম বর্ষের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা শেষ করে। আমার মেয়ে যাতে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা দূরে ঠেলে একটি সুন্দর ও সুখী জীবন গড়তে পারে সে লক্ষ্যেই পড়ালেখায় এগিয়ে চলছে।
শাহীন প্রধান আরও বলেন, আমি যা আয় করি, এ দিয়ে সংসার চালানোই কষ্টের। তার ওপর সোনিয়ার পড়ালেখায় এগিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা কতটা পূরণ করতে পারব জানি না। তাই সোনিয়ার লেখাপড়া ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিশেষ নজর দিতে দেশের বিভিন্ন সংগঠন, প্রতিষ্ঠান, এনজিও এবং সরকারি-বেসরকারি সংস্থা কিংবা মানবিক ব্যক্তিত্বদের আর্থিকসহ সব ধরনের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।
মন্তব্য করুন