কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় আমন ধান ঘরে তোলার পর বোরো ধান আবাদের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন কৃষকরা। এসব জমি ঘিরে আগাগোনা বেড়েছে সাদা বকের। মূলত জমিতে থাকা কীটপতঙ্গ খেতেই জড়ো হয় এই বকেরা। ফসলের মাঠে বকের মিলন মেলায় যেন চিরচেনা বাংলার অপরূপ চিত্র ফুটে উঠেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ফসলি মাঠে ঘন কুয়াশার মধ্যে কৃষকরা ইরি-বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যে জমি চাষ করছেন। এসব চাষকৃত জমিতে ও এর আশপাশের জমিতে অসংখ্য সাদা বকের ঝাঁক। এরা চাষকৃত জমির মাটির নিচ থেকে বেরিয়ে আসা নানা ধরনের পোকামাকড় খেতেই জড়ো হয়েছে। অসংখ্য বকের উড়ে যাওয়ার এমন দৃশ্যে ফসলের মাঠে এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, জমি চাষের সময় প্রতিদিন সকাল হলেই কোথা থেকে যেন ছুটে আসে দলবেঁধে সাদা বক মূলত ক্ষেতের পোকামাকড় খায়। একসঙ্গে এতো বকের উপস্থিতি বছরের অন্য সময় দেখা যায় না। তবে কোনো পাখি শিকারী যাতে এদের শিকার করতে না পারে সে দিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ইয়ামিন ইসলাম বলেন, আমাদের বাড়ির পাশের জমিগুলোতে ভোর থেকেই সাদা বকের ঝাঁক দেখা যায়। বকগুলোর ওড়াউড়ি ও খুনসুটি দেখতে বেশ ভালো লাগে। এ দৃশ্য যেন মন ভালো করে দেয়।
স্কুল শিক্ষক জামাল হোসেন বলেন, পাখি প্রকৃতির সম্পদ। আমাদের ভুলে অনেক পাখি আজ বিপন্নের পথে। সাদা বকও একসময় যতটা দেখা যেত দিন দিনই এর সংখ্যা কমে আসছে। পাখিদের বিপন্নের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রথমেই আমাদেরকে এর শিকার বন্ধ করতে হবে। পাখিদের বাসযোগ্য আবাসস্থল সংরক্ষণ করতে হবে।
তিনি বলেন, এ সময়টায় সাদা বক উল্লেখযোগ্য হারে কৃষি জমিতে বেশি দেখা যাচ্ছে। ফসলি জমির কীটপতঙ্গ খেতেই এরা ঝাঁক বেধে আসছে চাষাবাদ করা জমিতে। তবে এ বকগুলোকে যেন শিকারিরা বিরক্ত না করে সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মাসুদ রানা কালবেলাকে বলেন, সাদা বক একটি অতি পরিচিত পাখি। গ্রামাঞ্চলে এই পাখির অবাধ বিচরণ দেখা যায়। এরা সাধারণত ছোট মাছ ও কীটপতঙ্গ খায়। তবে এ পাখি আগের তুলনায় অনেক কম দেখা যায়।
তিনি বলেন, এ সময়টায় কৃষকরা বোরো ধান আবাদ করার জন্য জমি চাষ করছে। ফসলের মাঠে বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় থাকে। জমি চাষ করার কারণে এসব মাটির নিচ থেকে বাইরে বেরিয়ে আসে। আর এসব খেতেই সাদা বকগুলো জমিতে জড়ো হয়। এতে ফসলের মাঠের ক্ষতিকর পোকামাকড় নিধন হয়। ফলে কৃষকদেরও উপকার হয়।
মন্তব্য করুন