বরিশাল মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম খান লিটু ও সাবেক যুগ্মসাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আকবরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (০৮ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে নগরীর নাজিরের পুল এলাকার বর্মন রোড এবং তার পাঁচশ গজের মধ্যে কাউনিয়া প্রধান সড়কে এ দুটি ঘটনা ঘটে।
মোটরসাইকেলযোগে আসা ২০-২৫ জনের একটি দল মাথায় হেলমেট এবং মুখোশ পড়ে হামলা-ভাঙচুর করেছে বলে দাবি করেছেন মজিবর রহমান সরোয়ার অনুসারী বিএনপি নেতা সৈয়দ আকবর।
তিনি বলেন, ঘটনার সময় আমি বাসায় ছিলাম না। মোটরসাইকেলে একদল লোক এসে আমার বাসার দরজা, জানালায় লাথি এবং লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ভাঙচুর করে চলে যায়। খবর পেয়ে আমি বাসায় গিয়ে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র দেখে থানা পুলিশকে খবর দেই। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এই বিষয়ে আইনগত সহায়তা নেতার কথা জানান তিনি।
হামলার কারণ উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘বৃহস্পতিবার (০৯ জানুয়ারি) বরিশাল মহানগর বিএনপির পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের বড় কর্মসূচি রয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ করা হবে।’
তিনি অভিযোগ করেন, আমাদের নেতাকর্মীদের মাঝে ভিতি সৃষ্টি করে আমাদের কর্মসূচিতে বাধা সৃষ্টির জন্যই আমার বাড়িতে পরিকল্পিতভাবে হামলা করা হয়েছে বলে আমার বিশ্বাস। তবে কারা এই হামলায় জড়িত থাকতে পারে সে বিষয়ে অবগত নন বলে জানান তিনি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল মহানগর বিএনপি দুই ভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন দলের পদবঞ্চিত নেতাদের বড় একটি অংশ। এই অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ার। যার বাড়িতে হামলা হয়েছে সেই সৈয়দ আকবর মজিবর রহমান সরোয়ার শিবিরের অন্যতম নেতা।
যদিও কোনো নেতার বাড়িতে হামলার খবর জানা নেই বলে দাবি করেছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক। তিনি বলেন, ‘আমরা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক-সদস্য সচিব সবাই ঢাকায় রয়েছে। তবে শুনেছি নাজিরের পুল সংলগ্ন একটি ক্লাবে জুয়ার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দুই দফা মারামারি হয়েছে, ভাঙচুর হয়েছে। ওই ক্লাবটি আগে আওয়ামী লীগের দখলে ছিল। এখন সেটা কারা নিয়ন্ত্রণ করছে সেটা আমরা বরিশালে গিয়ে তদন্ত করে দেখবো। এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রয়োজনে ক্লাবটি বন্ধ করে দেওয়া হবে।’
ভাঙচুরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মহানগরীর কাউনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ নাজমুল নিশাদ বলেন, ‘শুধু সৈয়দ আকবর নয়, তার বাড়ির অদূরে লিটু নামের এক ওয়ার্ড বিএনপি নেতার বাড়িতেও হামলা হয়েছে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ সময় ডিবির টিমও ছিল। কিন্তু কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা কেউ চিহ্নিত করতে পারেনি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ঘটনাস্থলের অদূরে নাজিরের পুল এলাকার কোনো ক্লাবে হামলা-ভাঙচুরের খবর পাওয়া যায়নি এবং এমন কোনো ঘটনা ঘটেছে বলে কেউ অভিযোগও করেনি বলে জানান থানা পুলিশের এ কর্মকর্তা।
মন্তব্য করুন