রাজধানী ঢাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে মো. আব্দুল্লাহ বাবু নামে এক ব্যক্তির চোখ হারান।এ ঘটনায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ৮৪ জনের নাম উল্লেখসহ ১০০-১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।
তবে নাম উল্লেখ করা ৮৪ জন আসামির মধ্যে দৈনিক কালবেলার পাংশা (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি মো. শামীম হোসেনকে ৫৮নং আমামি করা হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে কিছুই জানেন না মামলার বাদী মো. আব্দুল বারিক শেখ।
গত বছরের ৩১ অক্টোবর আহত বাবুর বাবা মো. আব্দুল বারিক শেখ বাদী হয়ে ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। মো. আব্দুল বারিক শেখ ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের কলতাপাড়া গ্রামের মৃত ইজ্জত আলীর ছেলে।
মামলার বাদী মো. আব্দুল বারিক শেখ বলেন, ‘দৈনিক কালবেলার সাংবাদিক মো. শামীম হোসেনকে আমি চিনি না। আমি তার বিষয়ে কিছু জানিও না। আমার বিভিন্ন শুভাকাঙ্ক্ষীদের মাধ্যমে নাম ঠিকানাগুলো সংগ্রহ করে এ মামলায় অভিযুক্তদের আসামি করেছি। শামীমের নাম-ঠিকানা কে দিয়েছে আমার একটু খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’
জানা যায়, মামলার অন্য আসামির মধ্যে রয়েছেন সাবেক মহাপুলিশ পরিদর্শক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক র্যাব পরিচালক মো. খোরশেদ হোসেন, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার, সাবেক ডিএমপি কমিশনার মো. হাবিবুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহম্মেদ মান্নাফী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন মহি, ঢাকা দক্ষিণ মহানগর যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইনুদ্দিন রানা, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা, টুটুল, রফিকুল ইসলাম, মশিউর রহমান সজল, মইন উদ্দিন ও রাগিব আহসান প্রমুখ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত বছরের ১৯ জুলাই জুমার নামাজ শেষে বন্ধুদের সঙ্গে যাত্রাবড়ী গোলাপবাগ এলাকায় একটি মিছিলে ছিলেন মো. আব্দুল্লাহ বাবু। হঠাৎ একটি বাসার ভেতর থেকে বেড়িয়ে এসেই পুলিশ সরাসরি রাবার বুলেট ছুটতে থাকে। এ সময় চোখ, মুখ-নাকেও গুলিবিদ্ধ হন বাবু।
এ বিষয়ে মো. শামীম হোসেন বলেন, আমি একজন সংবাদকর্মী। আমি দৈনিক কালবেলার শুরু থেকেই পাংশা (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে আসছি। মামলায় আমাকে যুবলীগ নেতা হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি কখনোই কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম না, বর্তমানেও নেই। এ ছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময়ে ঢাকায় অবস্থান করিনি। আমি আমার কর্মস্থল পাংশায় সার্বক্ষণিক অবস্থান করেছি। আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে। এ বিষয়ে পাংশা প্রেস ক্লাবের আহ্বায়ক এম এ জিন্নাহ বলেন, ‘কালবেলার পাংশা (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি মো. শামীম হোসেনকে ঢাকার একটি রাজনৈতিক মামলায় আসামি করা হয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাই। অবিলম্বে এ মামলা থেকে শামীম হোসেনকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।’
মন্তব্য করুন