রংপুরের গঙ্গাচড়ায় অনৈতিক কাজে বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে অ্যাসিড মেরে হত্যার অভিযোগ উঠেছে রুবেল মিয়া নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) উপজেলার সদর ইউনিয়নের চেংমারী চওরাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধূর নাম- মারুফা আক্তার নিশি (২৫)। তিনি চেংমারী চওরাপাড়া এলাকার রুবেল মিয়ার (৩২) স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, বিয়ের পর থেকেই রুবেল মাদক চোরাচালান, জাল টাকা এবং বহিরাগত নারীদের দিয়ে দেহ ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। স্ত্রী এসব কাজে বাধা দেওয়ায় তার ওপরে অমানুষিক নির্যাতন চলে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে প্রায়ই রাগ করে বাবার বাসায় চলে যেতেন নিশি। এসব কাজে রুবেলের বাবা-মা প্রতিবাদ করলে তাদেরও মারধর করত।
এক পর্যায়ে গত ২৬ ডিসেম্বর রাতে রুবেল তার স্ত্রী নিশির গায়ে অ্যাসিড নিক্ষেপ করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় রুবেলের পরিবার নিশিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। গত ৪ জানুয়ারি নিশিকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসে রুবেল ও তার পরিবারের সদস্যরা। সোমবার রাত দেড়টার দিকে শ্বশুরবাড়িতে মারা যান নিশি।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে আরও বলেন, বিষয়টি রাতেই ধামাচাপা দিতে রুবেল ঘরে থাকা একটি মোটরসাইকেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। পরে তার স্ত্রী আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেয়।
নিহতের বাবা মোহাম্মাদ আলী বলেন, সোমবার রুবেলের চাচাতো ভাই ফুল মিয়া আমি ও আমার স্ত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে তিনটি ফাঁকা স্ট্যাম্পে সই নেয়। আমি এবং আমার স্ত্রীকে বলেছিল, আমার মেয়ের নাকি একটা বড় ধরনের অপারেশন করাতে হবে। মঙ্গলবার সকালে শুনতেছি আমার মেয়ে মারা গেছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
রুবেলের বোন রেজওয়ানা বেগম বলেন, ভাবী নিশি ২৬ ডিসেম্বর রাত ১০টায় নিজের গায়ে নিজেই আগুন লাগিয়েছে। সাড়ে ১০টায় আমরা রংপুর মেডিকেলে ভর্তি করাই। চিকিৎসকের পরামর্শে আমরা ঢাকায় নিয়ে যাই।
গঙ্গাচড়া মডেল থানার ওসি আল এমরান কালবেলাকে বলেন, লাশটির সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন