ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার মঙ্গলপৈতা গ্রামের রিপন গাজির মেয়ে তানিয়াকে বিয়ে দিয়েছেন একই উপজেলার বাদেডিহী গ্রামের সোহেল রানার কাছে। বিয়ের পর থেকে তিন দফায় মেয়ের জামাই সোহেলকে যৌতুক হিসেবে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়েছেন শ্বশুর রিপন গাজি। এরপরও যৌতুকের দাবিতে তানিয়ার ওপর নির্যাতন চালায় স্বামী ও তার পরিবার। সবশেষ আবারও যৌতুক না পেয়ে তানিয়ার পায়ে শিকল বেঁধে তালাবদ্ধ করে রাখেন স্বামী সোহেল রানা। পরে পুলিশ গিয়ে মুক্ত করে ভুক্তভোগীকে।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বাদেডিহী গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাতে তানিয়ার বাবা রিপন গাজি বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার বাদেডিহী গ্রামে। এ ব্যাপারে মঙ্গলবার রাতে তানিয়ার বাবা রিপন গাজি বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেছেন।
তানিয়ার বাবা রিপন গাজি বলেন, তানিয়ার তিন মাসের শিশুসহ দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে জামাই সোহেল রানা আমার মেয়েকে প্রায়ই যৌতুকের জন্য মারধর করত। যে কারণে মেয়ের ভালোর জন্য কয়েক দফায় বেশ কিছু টাকাও দিয়েছি। কিন্ত যৌতুকলোভী জামাই ও তার পরিবারের লোকজনের আচরণের কোনো পরিবর্তন হয়নি। উল্টো তানিয়াকে আবার টাকা আনতে বলে। এতে সে রাজি না হওয়ায় গত ৬ জানুয়ারি সকালে তানিয়াকে মারধর করে পায়ে শিকল দিয়ে তালাবদ্ধ ঘরে আটকে রাখে। খবর পেয়ে পরের দিন সকালে জামাইবাড়ি গেলে আমাকেও মারধর করে তারা।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি থানা পুলিশকে জানালে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ আমাদের উদ্ধার করে।
নির্যাতিত গৃহবধূ তানিয়া খাতুন বলেন, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য স্বামীসহ তার পরিবারের লোকজন আমার ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছে। বাবা গরিব মানুষ হলেও আমার সুখের জন্য কয়েক দফা টাকা দিয়েছেন। তারপরও টাকার জন্য নির্যাতন বন্ধ করেনি। গত সোমবার আমার শাশুড়ি, স্বামী ও ননদ মিলে মারধর করে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে তালাবদ্ধ অবস্থায় আটকে রাখে। বাবা এসে নির্যাতনের কারণ জানতে চাইলে ওনাকেও মারধর করে। পরে পুলিশ এসে উদ্ধার করে। এমন যৌতুকলোভী স্বামী ও তার পরিবারের লোকজনদের শাস্তি হওয়ায় উচিত।
কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, গৃহবধূকে পায়ে শিকল বেঁধে আটকে রাখা হয়েছে শুনে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। তারা ঘটনাস্থল থেকে গৃহবধূ তানিয়াকে পায়ে শিকল বাঁধা ও তার বাবা রিপন গাজিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় নির্যাতিত তানিয়ার বাবা রিপন গাজি বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
মন্তব্য করুন