রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় এক স্কুল শিক্ষককে আটকে রেখে মারধরের পর চাঁদা আদায় ও ফাঁকা স্ট্যাম্পে সই করে নেওয়ার অভিযোগে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন বাগমারার তাহেরপুর পৌরসভার চৌকিরপাড়া মহল্লার শাহিনুর ইসলাম (২৯) ও আলমগীর হোসেন (২৫)। সোমবার (০৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর ভুক্তভোগী ওই স্কুল শিক্ষক বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মঙ্গলবার (০৭ জানুয়ারি) বিকেলে তাহেরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ সোহাইল হোসেন জানান, মুক্তিপণের টাকা, স্বর্ণ ও চেক উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অপহরণের শিকার শিক্ষকের নাম আক্কাছ আলী। তিনি উপজেলার হামিরকুৎসা ইউনিয়নের অর্জুনপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। বসবাস করেন তাহেরপুর চৌকিরপাড়ায়। শনিবার (০৪ জানুয়ারি) রাতে আক্কাছকে অপহরণ করে শাহিনুর ইসলাম, আলমগীর হোসেনসহ ৮-১০ যুবক। তাকে তারা অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে ঘরে আটক রেখে মারধর করে অপহরণকারীরা। একপর্যায়ে তার কাছে থাকা ১৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে বিকাশের মাধ্যমে পরিবারের কাছ থেকে আরও ১২ হাজার টাকা নেয় অপহরণকারীরা। অপহরণকারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তাদের দুই ভরি স্বর্ণ, ৬০০ টাকা মূল্যের দুটি নন-জুডিশিয়াল স্টাম্প এবং ফাঁকা চেকে সই নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
অপহরণকারীদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়ার পর বিষয়টি পুলিশকে জানান আক্কাছ আলী। রোববার (০৫ জানুয়ারি) তিনি বাদী হয়ে সাতজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। এরপর পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান দুই আসামিকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।
আক্কাছ আলীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ে জড়িত যুবকরা ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে তারা নিজেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালিয়ে আসছিল। তবে তারা ছাত্রদলের কেউ নয় বলে জানিয়েছেন তাহেরপুর পৌর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আরিফুল ইসলাম আরিফ।
তিনি বলেন, এই চক্রটি ৫ আগস্টের আগে ছাত্রলীগের সঙ্গে ছিল। রাতারাতি তারা আবার ছাত্রদল সাজতে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালিয়ে আসছে। দলীয় কিছু মিটিং মিছিলেও অংশ নিয়ে দলের দু-একজন নেতার সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়েছে। আসলে তারা ছাত্রদলের কেউ নয়।
মন্তব্য করুন