বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) ‘ভূগর্ভস্থ সেচ নালা বর্ধিতকরণের মাধ্যমে সেচ এলাকার সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের পরিচালককে (পিডি) লাঞ্ছিতের ঘটনা ঘটেছে। কাজ না পাওয়ার আশঙ্কা থেকে গত রোববার সন্ধ্যায় বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে কয়েকজন ঠিকাদার ও তাদের সহযোগীরা বিএমডিএর প্রধান কার্যালয়ে অবস্থিত ওই কর্মকর্তার কক্ষে এ ঘটনা ঘটায়। এ সময় তারা ওই কর্মকর্তার টেবিল ও ফ্যানসহ বেশ কিছু আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।
সোমবার (০৬ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় ওই কর্মকর্তার কক্ষে এ হামলার প্রমাণও পাওয়া যায়।
ভুক্তভোগী ওই প্রকল্প পরিচালকের নাম শহিদুর রহমান। তিনি বিএমডিএর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর (চলতি) দায়িত্বপ্রাপ্ত ও ‘ভূগর্ভস্থ সেচ নালা বর্ধিতকরণের মাধ্যমে সেচ এলাকার সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের পরিচালক।
প্রকল্পের দু-তিনজন কর্মচারী কালবেলাকে বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দলের নেতার ছেলে সাকিব ও তার আরেক ভাই সবুজসহ প্রায় ২০-২৫ জন রোববার সন্ধ্যায় পিডি স্যারের কক্ষে এসে হইচই শুরু করে। একপর্যায়ে তারা একটি ঠিকাদারি লাইসেন্সে অনেকগুলো কাজ চায়। কিন্তু স্যার নিয়ম মেনেই কাজগুলো দেওয়া হবে বলে জানালে তারা স্যারের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে স্যারকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে স্যারের সামনে থাকা টেবিলের কাচ ভেঙে ফেলে। পরে সেই কাচ তারা নিয়ে চলে যায়। এ সময় কক্ষে থাকা ফ্যানসহ বেশ কিছু আসবাবপত্রও ভাঙচুর করে তারা।’
গতকাল সোমবার দুপুরে ভুক্তভোগী ওই কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, তিনি অনেকটা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে অফিসে তার নিজের চেয়ারে বসে আছেন। এ সময় তার কর্মচারীরা টেবিলের কাচ ভেঙে তা নিয়ে গেছে বলে জানান। ভাঙা একটি ওয়াল ফ্যান দেখিয়ে বলেন, এটাও তারা ভাঙচুর করেছে।
এর আগে ঘটনাটির তদন্তে সোমবার সকালে ওই কর্মকর্তার কার্যালয়ে যায় পুলিশ।
মহানগরীর রাজপাড়া থানার ওসি আশরাফুল আলম জানান, তিনি ভুক্তভোগী প্রকল্প কর্মকর্তার কাছ থেকে ঘটনার বর্ণনা শুনেছেন। থানায় অভিযোগ করবেন কিনা জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ঢাকা থেকে ফিরলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
জানতে চাইলে ভুক্তভোগী পিডি শহিদুর রহমান বলেন, ‘টেন্ডার করা হয়েছে, এখনো রেজাল্টই হয়নি। এরই মধ্যে কাজ পাবে না মনে করে কয়েকজন ছেলে-পেলে এসে হইচই করেছে। ঠিকাদারের লোকজন ওদের পাঠিয়ে দিয়েছে।’
তারা কোন দলের লোক জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি তাদের ব্যক্তিগতভাবে চেনেন না। অন্যদিকে অফিসকক্ষ ভাঙচুর ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জবাবে জানান, ‘না ওটা তেমন কিছু না।’
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক (ইডি) শফিকুল ইসলাম বলেন, এটি হালকা ঘটনা হলেও দুঃখজনক। এ ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়, এ ব্যাপারে আলোচনা করা হচ্ছে। আমি ঢাকায় আছি। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জানানো হবে।
মন্তব্য করুন