কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় গ্রামীণ সড়কের ইট তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে। উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন ধনপতিখোলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ইট তুলে নেওয়ার ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের ধনপতিখোলা-কালারাইয়া এলাকার গ্রামীণ সড়কের ২৫০ ফুটের সলিংয়ের ইট তুলে নেওয়ার সত্যতা পাওয়া যায়। তুলে নেওয়া ইটগুলো আরসি নদীর ওপর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে নির্মাণাধীন একটি ব্রিজের কাজে ব্যবহার করছে। ব্রিজের ঠিকাদার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল আমিন। ব্রিজের কাজে ভালো মানের ইট ব্যবহারের কথা থাকলেও সড়কের পুরোনো ইট তুলে নিয়ে ব্রিজের কাজে লাগানোয় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আরসি নদীর ওপর ব্রিজের কাজ শুরু হলেও কাজের প্রথমটাই শুরু করেছে রাস্তার পচা ইট দিয়ে। এর আগেও রুহুল আমিন চেয়ারম্যান একটি কালভার্ট করেছিলেন, যা উদ্বোধনের আগেই ভেঙে যায়। আমরা চাই সাব-কন্ট্রাক্টর রুহুল আমিন চেয়ারম্যানকে বাদ দিয়ে এই কাজের মূল ঠিকাদারকে দিয়ে কাজ করানো হোক।
স্থানীয় আবু জাহের বলেন, রুহুল আমিন চেয়ারম্যান আমার ভাইয়ের জমি কেটে নিয়ে গেছে। এ ছাড়া আমাদের বাড়ির সামনে থাকা খাসজমির মাটিও বিক্রি করে দিয়েছেন। মাটি কাটার কারণে এখন এই জায়গা দিয়ে মানুষ চলাফেরা করতে পারে না। তিনি এই এলাকার অনেক ক্ষতি করেছেন। এখন রাস্তার ইট নিয়ে ব্রিজের কাজ করছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মনির হোসেন বলেন, রুহুল আমিন চেয়ারম্যান বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে তিনি এলাকার মানুষের ওপর অত্যাচার-অবিচার করেছেন। এখনো তিনি তার ত্রাসের রাজত্ব কায়েম রাখতে চাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই আমাদের এই ব্রিজটি যেন সঠিকভাবে হয়। টেন্ডার অনুযায়ী সব কিছুতে যেন নতুন সরঞ্জামাদি ব্যবহার করা হয়। সড়কের ইট তুলে নেওয়ার প্রতিবাদ করায় আমাকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করেন তিনি। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ ও সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ মিথ্যা। এই ব্রিজটি ১০০ মিটার সড়কসহ ৪ কোটি টাকার টেন্ডার। সড়কের যে অংশ থেকে ইট নেওয়া হয়েছে সেই অংশটা নতুন করে কার্পেটিং করব। কিছু মানুষ অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে এসব অভিযোগ করছে।
মুরাদনগর উপজেলা প্রকৌশলী রায়হানুল আলম চৌধুরী বলেন, ব্রিজের অ্যাপ্রোচ ও সঙ্গে ১০০ মিটার সড়ক কার্পেটিংয়ের কাজ আছে। এটা এই ঠিকাদারকেই করতে হবে।
মন্তব্য করুন