উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা মহাদেশে সাইকেলিং করে এবার বাংলাদেশে এসেছেন এক পর্তুগিজ তরুণী। দীর্ঘ ১০ মাস আগে পর্তুগাল থেকে রওনা দিয়ে গোটা ইউরোপ ঘুরে তুরস্ক, জর্জিয়া, আর্মেনিয়া, ইরান, পাকিস্তান বর্ডার পার করে ভারতের কলকাতার বনগা হয়ে সীমান্ত পেরিয়ে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন তিনি।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) বিকেল ৪টায় ফরিদপুরের মল্লিকপুর দিয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন ভীনদেশি এই তরুণী।
সাইকেলে ঝোলানো ছিল তার জামা-কাপড়ের ব্যাগ, তাঁবু, শুকনো খাবারসহ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস। গন্তব্য তার ঢাকা।
ঢাকা থেকে নেপাল, চায়না হয়ে পূর্ব এশিয়ার দেশ ঘুরে তিনি যাবেন অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ। এভাবেই সাইকেল চালিয়ে ঘুরে দেখতে চান গোটা বিশ্ব। বিভিন্ন দেশের মানুষের সঙ্গে মিশে জানতে চান মানুষের জীবন যাত্রা ও সংস্কৃতি। লিখতে চান নিজের নাম গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে।
২৮ বছর বয়সী উদ্যমী এই তরুণীর নাম মারা মারকজ। পেশায় তিনি একজন চিত্রশিল্পী। যেখানেই তিনি যান, সেই এলাকার দর্শনীয় স্থান, জীবন-যাত্রা আর সংস্কৃতি তার চিত্রকর্মে রংতুলি দিয়ে ফুটিয়ে তোলেন। পর্তুগালের লেইরিয়া শহরে বাবা-মা ও ভাইয়ের সঙ্গে তিনি বসবাস করেন। তিনি একজন ভেজিটেরিয়ান এবং সাইকেলিং তার শখ। আর শখ থেকেই বিশ্বভ্রমণের ইচ্ছা তার।
৩৫ কিমি গতিতে ক্লান্তিহীন ছুটে চলছেন মারকজ। এমন সময় কালবেলা প্রতিবেদকের সঙ্গে দেখা হয় তার। ফরিদপুরের মল্লিকপুর থেকে ঢাকার পথে এগিয়ে গেলেই কানাইপুর বাজারের একটি রেস্তোরাঁয় মারকজ সাইকেল থামান এবং কালবেলাকে তার সাইকেলিংসহ বিভিন্ন দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়ানোর অভিজ্ঞতার কথা জানান। সেই সঙ্গে বাংলাদেশিদের আতিথিয়েতার প্রশংসা করে মারা মারকজ বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ খুব ভালো এবং আন্তরিক। তারা আমাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আপ্যায়ন করাতে চেয়েছে। আন্তরিকভাবে কথা বলেছে এবং খুব সাহায্যকারী তারা।’
সাইকেল চালিয়ে দক্ষিণ আমেরিকার পেরুতে তিনি দুই বছর আগে একটি দুর্ঘটনার শিকার হন এবং মারাত্মকভাবে আহত হন। এতে তার ডান হাতে বেশ খানিকটা কেটে যায়। বাংলাদেশের রাস্তায় গাড়ির চাপ বেশ এবং সাইকেল চালানো ঝুঁকিপূর্ণ বলেও জানান মারকজ। তবে তিনি নিরাপদভাবেই সাইকেল চালিয়ে এ পর্যন্ত এসেছেন।
বাংলাদেশের বায়ুদূষণ নিয়ে মারকজ বলেন, এ দেশের বাতাস দূষিত, তাই তাকে মাস্ক ব্যবহার করতে হচ্ছে। পদ্মা সেতুতে সাইকেল চালানোয় নিষেধাজ্ঞা থাকায় আইন মেনেই ফেরি পারাপার হয়ে ঢাকা যেতে চান মারা মারকজ।
অত্যন্ত বিনয়ী এবং প্রাণবন্ত মারকজ একজন উদ্যোমী নারী। বিশ্বভ্রমণের উদ্দেশ্যে ১০ মাস আগে বাড়ি থেকে বের হলেও আরও ১ বছর পরে মারা মারকজ বিশ্ব ঘুরে তবেই ফিরতে চান নিজ দেশ পর্তুগালে।
মন্তব্য করুন