ফরিদপুরে নিখোঁজের চার দিন পর বন্ধুর ভাড়া বাড়ি থেকে পুঁতে রাখা অবস্থায় রিকশাচালক হালিম শেখের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে শহরের লক্ষ্মীপুর মহল্লার মডেল টাউন এলাকার মোকলেছুর রহমানের বাড়ির রান্নাঘরের পেছন থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
হালিম শেখ (২৫) শহরের মধ্য আলিপুর মহল্লার বাসিন্দা মৃত আব্দুর রব শেখের ছেলে। ওই বাড়িটি বর্তমানে হালিম শেখের বন্ধু রনি (২৬) এবং তার স্ত্রী সুমী (২৩) ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন। রনি মোল্যা নরসিংদী জেলার কলাপাড়া রায়পুরা এলাকার আব্দুল মতিনের ছেলে। সুমির বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ময়েনদিয়া এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হালিমের রিকশাটি রনি যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন সেই বাড়ির উঠানে একটি টিনের ঘর থেকে ভাঙাচোরা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে ওই টিনের ঘরের পূর্বদিকে বাড়ির টিনের বেড়ার সীমানা প্রাচীর এলাকায় বালু খুঁড়ে বস্তাবন্দি অবস্থায় হালিমের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। মৃতের মাথায় আঘাতের চিহ্ন এবং গলাকাটা ছিল। তার দুই পা ভাজ করে একটি প্লাস্টিকের বস্তার মধ্যে হালিমের শরীর ঢুকিয়ে তাকে মাটিচাপা দেওয়া হয়।
হালিম শেখের বোন সাথী আক্তার বলেন, গত ৩১ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে তার ভাই বাড়ি থেকে রিকশা ভাড়া নিয়ে উপার্জনের জন্য বের হওয়ার পরে আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে গত ৩ জানুয়ারি তিনি ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি ডায়েরি করেন।
বাড়ির মালিক মোকলেছুর রহমান জানান, রনি এবং তার স্ত্রী গত দেড় মাস যাবত এই বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছিলেন। বাড়ি ভাড়া নেওয়ার সময় তারা স্বামী-স্ত্রী ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ওয়ার্ড বয়ের কাজ করত বলে জানায়।
রিকশার মালিক নূর ইসলাম বলেন, গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে হালিম তাকে ফোনে জানায় সে রাতে গ্যারেজে যাবে না, এক আত্মীয়র বাড়িতে বেড়াতে গেছে। পরের দিন ফিরবে। একপর্যায়ে আমরা জানতে পারি, হালিমের বন্ধু রনি মোল্যা তাকে ভাড়া করে নিয়ে যায়। পরে রনির বাড়িতে এসেই তার মরদেহ পেলাম।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল কালবেলাকে বলেন, গত ৩১ ডিসেম্বর তারা একসঙ্গে মধ্য আলীপুরে একটি ওয়াজ মাহফিলের ওয়াজ শুনে রিকশাচালক হালিম তার বন্ধু রনির সঙ্গে চুনাঘাটার বাসায় আসে। এরপর থেকে তার সন্ধান না পেয়ে শুক্রবার কোতোয়ালি থানায় একটি জিডি করে তার পরিবারের সদস্যরা। এরপর হালিমের স্বজনদের সন্দেহের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে হালিমের মরদেহ উদ্ধার ও তার রিকশার সন্ধান মিলে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, লাশের ঘাড়ে কোপের চিহ্ন রয়েছে। সম্ভবত তাকে কুপিয়ে হত্যার পরে এখানে পুঁতে রাখা হয়। দ্রুতই রনিকে গ্রেপ্তার করা হবে।
মন্তব্য করুন