গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের রাজাবিরাট এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক সাঁওতাল নারীকে মারধর ও তার বাড়িতে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
মারধরে আহত ফিলোমিনা হাসদা (৫৫) বর্তমানে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছে পরিবার।
ফিলোমিনা হাসদার ছেলে ব্রিটিশ সরেন বলেন, শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে গ্রামের পাশে সাঁওতালদের পৈতৃক জমি যা বাঙালিরা দখল করে নিয়েছে। সে জমিতে রাজাহার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মাটি ভরাট করেন। জায়গাটি আগে পতিত অবস্থায় ছিল। হঠাৎ করে চেয়ারম্যানকে সেই জমিতে মাটি ভরাট করতে দেখে স্থানীয় কয়েকজন সাঁওতাল যুবক বাধা দেন। তখন চেয়ারম্যানের সামনেই তার লোকজন আমার খালাত ভাই নিকোলাস মুর্মুকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। এ সময় আমরা কিছু দূরে আলুর ক্ষেতে কাজ করছিলাম। খালাত ভাইকে মারধরের কথা শুনে আমি প্রতিবাদ করতে গেলে চেয়ারম্যান আমাকে লাঠি দিয়ে মারতে আসেন। এ সময় আমার মা চেয়ারম্যানের লাঠি ধরতে গেলে চেয়ারম্যান তার কানে উপর্যুপরি থাপ্পড় দেন। এতে মার কান দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক তন্ময় জানান, ফিলুমিনা হাজদার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
নির্যাতিত সাঁওতাল পরিবারের দাবি, শুক্রবার রাত ১১টার দিকে চেয়ারম্যানের লোকজন বসতবাড়িতে আগুন দেয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ প্রসঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, ১০-১২ বছর আগে স্থানীয় এক বাঙালি মালিকের কাছ থেকে ১৬ শতক জমি কিনেছিলাম। সেই জমিতে মাটি ভরাট করতে গেলে ব্রিটিশ সরেনসহ কয়েকজন সাঁওতাল যুবক বাধা দেয়। আমার লোকজন তাদের তাড়িয়ে দেয়। আমি ব্রিটিশ সরেনের মাকে মারধর করিনি।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি বুলবুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, এ বিষয়ে থানায় একটি মামলা নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
মন্তব্য করুন