সাতক্ষীরা সদরের বল্লী মাধ্যমিক বিদালয়ের প্রধান শিক্ষক আজহারুজ্জামান মুকুলের বিরুদ্ধে এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। ফলে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে ভোকেশনাল বিভাগের ৫৩ শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় বুধবার (০১ জানুয়ারি) দুপুরে বিদ্যালয়ের সভাপতি সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অভিভাবকরা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিষয়টি তাৎক্ষণিক জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে হস্তান্তর করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২০২৫ সালের এসএসসি (ভোকেশনাল) শাখার পরীক্ষার্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষা গত ১০ নভেম্বর শেষ হয় এবং প্রধান শিক্ষক ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে এসএসসি ভোকেশনাল ফরম ফিলাপের শেষ তারিখ ঘোষণা দিয়ে নোটিশ প্রদান করেন। এত কম সময়ের মধ্যে ধার দেনা করে অভিভাবকরা নির্ধারিত সময়ের মধ্য ফরম ফিলাপ বাবদ টাকা পরিশোধ করেন।
কিন্তু প্রধান শিক্ষক আজহারুজ্জামান মুকুলের অবহেলা ও ভোকেশনাল শাখার প্রধান ট্রেড ইন্সট্রাক্টর আহসানউল্লাহ ও কম্পিউটার প্রদর্শক নাসরিন সুলতানার উদাসিনতার কারণে বোর্ডের নির্ধারিত গত ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে অনলাইনে ফরম ফিলাপ করা হয়নি। এখন ৫৩ জন শিক্ষার্থীর এসএসসি পরীক্ষা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।
এদিকে, শিক্ষার্থী প্রতি ৩০০ টাকা হারে বিলম্ব মাসুলসহ জমা দেওয়ার সুযোগ থাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর বিলম্ব ফি চাপার আশঙ্কা করেছে। তাছাড়া বিলম্ব ফিস উত্তোলনে প্রধান শিক্ষক কোচিং ফিসের মাধ্যমে টাকা নেওয়ারও পাঁয়তারা করছেন। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক দায়িত্বে অবহেলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দাবি জানান অভিভাবকরা।
একাধিক অভিভাবক জানান, প্রধান শিক্ষক আজহারুজ্জামান মুকুল তাড়াহুড়া করে গত ১৬ ডিসেম্বরের মধ্য টাকা জমা দেওয়ার কথা জানান। আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্য টাকা জমা দিয়েছি। তবে বোর্ডের দেওয়া নোটিশে দেখা যায় ৩০ ডিসেম্বরের মধ্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষার ফিসের জমা দিতে হবে তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রধান শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বোর্ডে টাকা জমা দেয়নি। ফলে অনিশ্চয়তায় পড়েছে ৫৩ শিক্ষার্থী।
এখন বিলম্ব ফিস নেওয়ার জন্য নানা ধরনের তালবাহানা করছে। যেহেতু প্রতিষ্ঠানের বর্তমান সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাই তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এ বিষয়ে তিনি তদন্তপূর্বক দায়িত্বে অবহেলার বিষয়টি দেখবেন এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আজাহারুজ্জামান মুকুল জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বোর্ডে ফিস জমা দেওয়া হয়নি। তবে পরে জমা দেওয়া হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নারায়ণ চন্দ্র জানান, ইউএনও অভিযোগপত্রটি আমার কাছে হন্তান্তর করেছেন। তাৎক্ষণিকভাবে ওই প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে আলাপ করেছি।
প্রধান শিক্ষক অন্য শিক্ষকদের ওপর দোষারোপ করে বলেন, তিনি বিলম্ব ফিস মওকুফ করে ফরম পূরণের বিষয়টি দেখবেন। এ সময় কয়েকজন অভিভাবকের সঙ্গেও কথা বলা হয়। এখানে দায়িত্ব অবহেলা হয়েছে এটার প্রমাণ মিলেছে। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে দেওয়া হবে। যেহেতু তিনি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি তাই সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
মন্তব্য করুন