উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা কুড়িগ্রামে জেঁকে বসেছে শীত। কনকনে হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এ জেলার নদী-তীরবর্তী চরাঞ্চলের মানুষ। সকাল থেকে সূর্যের দেখা না পাওয়া আর বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ার কারণে এ জেলায় সব থেকে বেশি কষ্টে পড়েছেন ছিন্নমূল মানুষজন। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১-১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে।
বুধবার (১ জানুয়ারি) সকাল ৬টায় জেলায় ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ৯৮ শতাংশ।
রাজারহাট উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের কৃষি শ্রমিক সেকেন্দার বলেন, দিনে সূর্য উঠলেও ঠান্ডা বাতাসের কারণে স্বস্তি লাগে না। ফলে খেতে কাজ করা কষ্টকর হয়। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত কনকনে ঠান্ডায় ঘর থেকে বের হওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে।
উমরমজিদ ইউনিয়নের কৃষি শ্রমিক সুধীর চন্দ্র রায় বলেন, জমিতে চারা তৈরির জন্য ধান ছিটাচ্ছি। কিন্তু এত ঠান্ডা যে, কাদা পানিতে পা রাখা যাচ্ছে না। ঠান্ডার কারণে ঠিকমত কাজ করতে পারছি না। শীতের কাপড় কম থাকায় রাতে বউ-বাচ্চাসহ কষ্টে ভুগছি।
অটোরিকশাচালক রবিউল ইসলাম বলেন, সকালে হেডলাইট জ্বালিয়ে অটো চালাতে হয়। অতিরিক্ত ঠান্ডায় যাত্রী কম হয়। রুটিরুজির জন্য কনকনে ঠান্ডা ও শীতে গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছি।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গ্রামে থাকা ছিন্নমূল, অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধদের অবস্থা নাকাল। হতদরিদ্র-ছিন্নমূল মানুষ শীতবস্ত্রের অভাবে অনেকেই খড়-কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা চালাচ্ছেন। ঘন কুয়াশার কারণে রাস্তার অদূরে কিছুই দেখা যায় না। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে সড়ক, মহাসড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল করছে হেডলাইট জ্বালিয়ে।
রাজারহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির কারণে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এর মধ্যে সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি। কয়েক দিন ধরে তীব্র শীতের কারণে শিশুদের নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। শিশুদের যাতে শীত না লাগে এ ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার কালবেলাকে বলেন, তাপমাত্রা আরও নিম্নগামী হচ্ছে। আজ বুধবার সকাল ৬টায় জেলায় ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৯৮ শতাংশ।
মন্তব্য করুন