মেহেরপুর শহরের হোটেল বাজার জামাল শপিং কমপ্লেক্সের একটি জেন্টস পার্লার (সেলুন) থেকে আটক ২ অনলাইন ক্যাসিনো এজেন্টসহ ৪ জনের নামে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছে পুলিশ। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ১২ জনকে। এজাহারভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন আশিক ইকবাল, স্বপন ইকবাল এবং অনলাইন জুয়ার অন্যতম মাস্টার মাইন্ড মুকুল হোসেন ও দেলোয়ার হোসেন দিপু।
এদের মধ্যে আশিক ইকবাল ও স্বপন ইকবালকে অনলাইন জুয়ার সাইট পরিচালনায় ব্যবহৃত মোবাইলসহ আটক করেছে ডিবি। এ সময় তাদের কাছে থেকে ৪টি মোবাইল ফোন ও জুয়ার টাকা লেনদেনের ৭টি এজেন্ট সিম উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রোববার আইনজীবীর মাধ্যমে তারা জামিনের আবেদন করলে আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে দেন।
আটক আশিক ইকবাল মেহেরপুরের গোপালপুর গ্রামের আক্তারুজ্জামানের ছেলে। তিনি পুলিশ কনস্টেবল এবং যশোর নারী ও শিশু নিযার্তন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারকের বডিগার্ড হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। স্বপন ইকবাল একই গ্রামের আওলাদ হোসেনের ছেলে।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেহেরপুর সদর থানার বিএম স্কুলের পাশে জামাল শপিং কমপ্লেক্সের নিউ অ্যাডামস জেন্টস পার্লারে (সেলুন) আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অনলাইন জুয়া পরিচালনার, অসৎ উদ্দেশ্যে পরিচয় গোপন করে ছদ্মবেশ ধারণ করে প্রতারণা, অনলাইন মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ব্যতীত অবৈধ ই—ট্রান্সজেকশনসহ ইচ্ছাকৃতভাবে ইন্টারনেট নেটওয়ার্কে প্রবেশ করে সাইবার সন্ত্রাসী কার্যক্রম করছিলেন। এ সময় সাইবার নিরাপত্তা টিমের সদস্যরা সেখানে অভিযান পরিচালনা করলে পালানোর চেষ্টাকালে আশিক ইকবাল ও স্বপন ইকবালকে আটক করা হয়। তার আগেই সেখান থেকে মুকুল ইসলাম ও দেলোয়ার হোসেন দিপু কৌশলে পালিয়ে যায়।
মামলার এজার নামীয় আসামি দেলোয়ার হোসেন দিপু কালবেলাকে একটি ভিডিও বার্তায় জানান, ‘ঘটনার সময় তার উপস্থিতি ছিল নিজ বাড়িতে। বাড়িতে উপস্থিতির প্রমাণ সাপেক্ষে তার বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ তিনি কালবেলাকে সরবরাহ করেন। তিনি তাকে অন্যায়ভাবে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে দাবি করে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন।’
মেহেরপুর সদর থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, ‘জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে দুজন সাইবার অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে। পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে আটককৃত স্বপন ইকবাল ও পুলিশ কনস্টেবল আশিক ইকবালের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইমে মামলা দায়ের করে। আমরা সদর থানায় মামলাটি নথিভুক্ত করেছি মাত্র।’
বিষয়টি নিয়ে মেহেরপুরের পুলিশ সুপার মাকসুদা আকতার খানমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি কালবেলাকে বলেন, পুরো বিষয়টি তদন্তাধীন। অপরাধীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলবে। তদন্তের স্বার্থে এ মুহূর্তে আমার আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেওয়া ঠিক হবে না।
মন্তব্য করুন