ঢাকায় দাফনের ৩ বছর পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা হারিছ চৌধুরীর মরদেহ (দেহাবশেষ) সিলেটে স্থানান্তর করা হয়েছে। রোববার (২৯ ডিসেম্বর) বাদ আসর সিলেটের কানাইঘাটে নিজের প্রতিষ্ঠিত শফিকুল হক চৌধুরী মেমোরিয়াল এতিমখানা প্রাঙ্গণে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দ্বিতীয় দাফনের মাধ্যমে তাকে কবরস্থ করা হয়।
এর আগে বাদ জোহর দেহাবশেষবাহী গাড়ি সিলেট শাহি ঈদগাহ মাঠে নেওয়া হয়। সেখানে মুনাজাত করা হয়। মুনাজাতের আগে বক্তব্য রাখেন মেক্সিকোর রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী ও হারিছকন্যা ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরী। এ সময় হারিছ চৌধুরীর বর্ণাঢ্য জীবনের স্মৃতিচারণ করা হয়।
এ সময় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী , মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমদ চৌধুরী, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-ক্ষুদ্র ও ঋণবিষয়ক সম্পাদক এবং সিলেট জেলা জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি সালেহ আহমদ খসরু ও মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পদাক বদরুজ্জামান সেলিম উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাত আড়াইটা দিকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে হরিছ চৌধুরীর দেহাবশেষ নিয়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন মেয়ে ও স্বজনরা। রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তারা সিলেট সার্কিট হাউসে এসে পৌঁছেন। পরে সেখানে প্রশাসন এবং সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাদের পক্ষ থেকে দেহাবশেষে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২০ ডিসেম্বর হারিছ চৌধুরীর লাশ পুনরায় দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরী ও আত্মীয়স্বজনদের উপস্থিতিতে কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাজরিনের তত্ত্বাবধানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর হারিছ চৌধুরী মৃত্যুবরণ করলে ওই সময় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তার পরিচয় গোপন করে অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান নামে সাভারের বিরুলিয়ায় জামিয়া খাতামুন্নাবিয়্যিন মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে দাফন করা হয়।
পরে মেয়ে সামিরার এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলন করা হয়।
লাশ তোলার পর ডিএনএ পরীক্ষার জন্য সিআইডি নমুনা সংগ্রহ করে এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়। পরে ডিএনএ টেস্টে লাশটি হারিছ চৌধুরীর নিশ্চিত হওয়ার পর পরিবারের পক্ষ থেকে সিলেটে দাফনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
হারিছকন্যা সামিরা তানজিন চৌধুরী বলেন, আমার বাবার প্রতিষ্ঠিত এতিমখানার আঙিনায় নির্ধারিত স্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন