চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে জাহাজে সাত খুনের ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে দেশব্যাপী কর্মবিরতিতে গেছেন নৌযান শ্রমিকরা। এতে নৌবন্দরগুলোতে বন্ধ হয়ে গেছে স্বাভাবিক কার্যক্রম। চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর ও ১৭টি ঘাটে তেল-সারসহ আটকা পড়েছে সাড়ে চার লাখ টন পণ্য। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্য।
এর মধ্যে নৌপরিবহন অধিদপ্তর থেকে বৈঠকের আহ্বান পেলেও তাতে যোগ দিবেন কিনা সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। তাদের মতে, বৈঠক নয়, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কাজেও নামতে রাজি নন। তবু বৈঠকের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
চট্টগ্রাম বন্দর ও লাইটার জাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থা বাংলাদেশ ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের তথ্য মতে, গত ২৬ ডিসেম্বর রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে শুরু হওয়া নৌযানের শ্রমিকদের এই কর্মবিরতিতে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর থেকে সব ধরনের পণ্য খালাস বন্ধ হয়ে গেছে। কর্ণফুলী নদীর ১৭টি ঘাটসহ দেশের অভ্যন্তরীণ নৌরুটে পণ্য পরিবহন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে শত শত লাইটারেজ জাহাজ অলস বসে আছে। বন্দর বহির্নোঙরে ২০টি বড় জাহাজে খালাসের অপেক্ষায় আটকে আছে সয়াবিন বীজ, সার, গম, মসুর ডাল, মটর ডাল, কয়লা ও সিমেন্টের কাঁচামালসহ প্রায় সাড়ে চার লাখ টন পণ্য।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের অফিস সচিব মো. আতিকুল ইসলাম টিটু বলেন, চাঁদপুরের হরিণাঘাটের কাছে মাঝেরচর এলাকায় জাহাজে সাত খুনের রহস্য উদ্ঘাটন এবং জড়িতদের বিচারসহ আরও কিছু দাবিতে বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাত ১২টা থেকে সারা দেশে একযোগে নৌশ্রমিকদের কর্মবিরতি চলছে।
সংগঠনটির সভাপতি মো. শাহ আলম বলেন, আমাদের দাবি পূরণ না করা পর্যন্ত শ্রমিকদের কাজে নামানো সম্ভব হবে না। আমরা তো দাবিগুলো বলেছি। বর্তমানে মাল, তৈল-গ্যাস, কয়লা ও বালুসহ সব ধরনের পণ্যবাহী নৌযান চলাচল এবং পণ্য ওঠা-নামা বন্ধ রয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ ধর্মঘট চলবে।
সরকারের পক্ষ থেকে বৈঠকের আহ্বান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রোববার মিটিংয়ের জন্য আামাদের ডেকেছেন। মিটিং না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি প্রত্যাহার করতে অনুরোধ করেছেন। সেটা সম্ভব নয়। তবু কর্মবিরতি নিয়ে আমরা ভাবছি। দুপুর ২টার পর আমরা শ্রমিকরা বসব। আমাদের মিটিংয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তখন সেটা জানাতে পারব।
মন্তব্য করুন