দীর্ঘ ১৩ বছর পর আগামী ২৮ ডিসেম্বর দেশে আসছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান, কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসন থেকে বারবার নির্বাচিত সাবেক এমপি ও সাবেক মন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন (কায়কোবাদ)। তাকে বরণ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নেতাকর্মীসহ মুরাদনগরের সর্বস্তরের জনতা।
কায়কোবাদকে স্বাগত জানাতে ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো উপজেলা। এ ছাড়াও ঢাকায় বিমানবন্দরে সংবর্ধনা জানাতে হাজির হবেন লক্ষাধিক জনতা। এ নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে চলছে মতবিনিময় ও সভা-সমাবেশ।
এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সচেতন এলাকাবাসীর ব্যানারে উপজেলা সদরে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ক্যাপ্টেন (অব.) হারুনুর রশিদ বলেন, ২০০৮ সালে মঈন-ফখরুদ্দীন সরকারের সাজানো নির্বাচনে যখন সারা দেশে ধানের শীষের ভোট নৌকায় গণনা করে আওয়ামী লীগকে জয়ী করা হয়, সে সময়েও আল্লাহর রহমতে মুরাদনগরে জনতার প্রতিরোধে কুমিল্লা-৩ আসনে সঠিকভাবে ভোট গণনা করতে বাধ্য হয়। আর সেই নির্বাচনে ৫ম বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ। তবে বিজয় তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নিশ্চিত হয়ে যায় কায়কোবাদকে সরাতে না পারলে মুরাদনগরে নৌকাকে বিজয়ী করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রধান এজেন্ডা হয়ে যায় কায়কোবাদ ঠেকাও। সে কারণেই ২০১০ সালে পতিত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সংসদে দাঁড়িয়ে সাবেক মন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদকে নিয়ে বিষোদগার করেন এবং বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাকে জড়িয়ে কল্পিত বক্তব্য দেয়। এরপর ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলায় অর্ধযুগ পর পরিকল্পিতভাবে ৩য় চার্জশিটে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের নাম সংযুক্ত করে। কোনো সাক্ষী-প্রমাণ ছাড়া সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আওয়ামী লীগের অনুগত বিচারক তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। কিন্তু সত্য কখনো চাপা থাকে না।
হারুনুর রশীদ বলেন, মহান আল্লাহর রহমতে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর এ মিথ্যা মামলার রিভিউ শুনানিতে তারেক রহমান ও কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদসহ সব নিরাপরাধ নেতারা খালাস পান। আমাদের প্রিয় নেতা দীর্ঘ একযুগ পর জালিমের জুলুম থেকে মুক্তি পেয়েছেন। এরই মাঝে হারিয়েছেন তার মমতাময়ী মাকে। মায়ের জানাজায় অংশগ্রহণ করার সুযোগটুকুও তাকে দেওয়া হয়নি। বরং বিভিন্ন সময়ে তার পরিবারের সদস্যদেরও হয়রানি করা হয়েছে। তার এক ভাইয়ের গাড়িতে হামলা ও আরেক ভাইকে জানাজা থেকে গ্রেপ্তার করেছিল ফ্যাসিস্ট সরকার।
তিনি বলেন, কায়কোবাদ কবে ফিরবেন মুরাদনগরের মানুষ সে প্রতীক্ষায় ছিল। আগামী ২৮ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ। সেখান থেকে তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত ও মুরাদনগরে তার বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করবেন।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, কায়কোবাদকে বরণ করতে কয়কশ গাড়িতে লক্ষাধিক মানুষ ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে তার আগমন ঘিরে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা ইতোমধ্যে নানা ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মুরাদনগরের বিভিন্ন কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, সেনাবাহিনী ও পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, চিকিৎসক, আইনজীবীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. শাহাজান, অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন মো. হারুনুর রশিদ, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন, আব্দুস সালাম, নজরুল ইসলাম ও বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রহিম মুন্সী।
মন্তব্য করুন