ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহীন জোয়ার্দারের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় তার দুটি দাঁত ভেঙে গেছে।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ছাত্রলীগ কর্মী মো. মোত্তাকিমের নেতৃত্বে ৬ থেকে ৭ জন হেলমেট ও মুখোশ পড়ে হকিস্টিক এবং এস এস পাইপ নিয়ে শাহীন জোয়ার্দারের ওপর হামলা করে। এতে ওই চিকিৎসকের দুটি দাঁত ভেঙে যায়। আহত চিকিৎসক শাহীন জোয়ার্দারের বাড়ি ফরিদপুর শহরের কোমরপুর এলাকায়।
অন্যদিকে, মারধরের নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ ওঠা মোত্তাকিম ফরিদপুরের জেড এম প্রাইভেট নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও শহরের পশ্চিম খাবাসপুর এলাকার মো. আলমগীরের ছেলে। তিনি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ন করছেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এছাড়া মোত্তাকিম শহর ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী, ছাত্রলীগের বিভিন্ন প্রোগ্রামে তার সরব উপস্থিতির একাধিক তথ্য পাওয়া গেছে।
এ ঘটনার পর উত্তেজিত ইন্টার্ন চিকিৎসক, হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একজনকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দেয়। ঘটনার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে হাসপাতালের চিকিৎসকসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
হাসপাতাল ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. শাহীন জোয়ার্দার হাসপাতালটির ট্রমা সেন্টার থেকে নিচে নামছিলেন। এসময় মোত্তাকিম সিঁড়ি দিয়ে নিচ থেকে উপরে উঠছিলেন। অসাবধানতাবশত শাহীন জোয়ার্দারের সঙ্গে ধাক্কা লাগে মোত্তাকিমের। এ নিয়ে দুইজনের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়।
পরে বাড়ি ফিরে মুত্তাকিম তার কিছু পরিচিতজনকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে পুনরায় গেলে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে চিকিৎসক শাহীন জোয়ার্দারকে মারধর করে মুত্তাকিম। এসময় চিকিৎসকের দুটি দাঁত ভেঙে যায়।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর দিলরুবা জেবা বলেন, শাহীন জোয়ার্দার ফরিদপুরের একজন স্বনামধন্য অর্থোপেডিক্স চিকিৎসক। তাকে যেভাবে প্রকাশ্যে মারধর করা হয়েছে, তার ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে আছে। আমরা ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা নেব। এছাড়া আমরা বিষয়টি ফরিদপুরের ডিসি, এসপিসহ স্বাস্থ্য বিভাগকে লিখিত আকারে জানাবো। এ ঘটনার পর থেকে আমাদের চিকিৎসকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
কোতয়ালী থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামান কালবেলাকে জানান, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
মন্তব্য করুন