জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। তবে শেখ হাসিনাসহ আগের যত দুঃশাসন ছিল সেই ব্যবস্থা এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছে বলেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহ নগরীর টাউন হল মুক্ত মঞ্চে আয়োজিত কেমন বাংলাদেশ চাই গণ সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জোনায়েদ সাকি বলেন, জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। এটা মনে রাখা সরবার দরকার, শেখ হাসিনা কিংবা এর আগেও যত দুঃশাসন হয়েছে তারা যে ব্যবস্থার ওপর দাঁড়িয়ে দুঃশাসন কায়েম করেছে সে ব্যবস্থা এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছে। সেই ব্যবস্থা বদল করা একটি বড় কাজ।
তিনি বলেন, জগদ্বল পাথরটাকে আমরা সরাতে পেরেছি, কাজেই ব্যবস্থা বদল করার ব্যাপারে আমরা পিছিয়ে গেলে হবে না, ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এটাই মূল বার্তা। গণতন্ত্রের জন্য গণতন্ত্রের পাহারদার শক্তির দরকার হয়। গণতন্ত্র এমন কোনো ব্যবস্থা নয় যে একবার খোদাই করে লিখে দেওয়া হলো তা সংক্রিয়ভাবে বাস্তবায়িত হবে। গণতন্ত্র মানে হচ্ছে জগণের হাতে ক্ষমতা, জনগণ ক্ষমতার কেন্দ্র।
গণসংহতি আন্দোলন ময়মনসিংহ জেলা শাখার উদ্যোগে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরে, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণসংলাপের আয়োজন করা হয়। কেমন বাংলাদেশ চাই শীর্ষক এই সংলাপটি নগরের টাউনহলের মুক্তমঞ্চে বিকেল সাড়ে তিনটায় শুরু হয়। চলে সাড়ে ৫ টা পর্যন্ত। এ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জোনায়েদ সাকি। এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে পাহারা না দিলে নানাভাবে জনগণের হাত থেকে ক্ষমতা দূরে সরে যায়। আমাদের দেশের বর্তমান সংবিধানে রয়েছে জনগণ হচ্ছে সকল ক্ষমতার উৎস্য। কিন্তু লেখা থাকার পরেও গত ৫৩ বছরে জনগণ ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকতে পারে নাই। কাজেই লেখা থাকলেই হবে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা বলছি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করতে হবে। কারণ বিদ্যমান বন্দোবস্ত একটি ফ্যাসিস্ট বন্দোবস্ত, কর্তৃত্ববাদী বন্দোবস্ত, স্বৈরাচারী বন্দোবস্ত। এর মধ্যে যারাই ক্ষমতায় যায় তারাই ক্ষমতা ব্যবহার করে স্বৈরতন্ত্র, ফ্যাসিবাদ, কর্তৃত্ববাদ এগুলো কায়েম করে। শেখ হাসিনা তার সর্ব্বোচ্চটা দেখিয়ে দিয়ে গেছে, কী কী করা যায়। তিনি ভেবেছিলেন এভাবে শক্তপোক্ত করে পুরোটাকে যদি জমিদারি বানিয়ে ফেলা যায় তাহলে বোধহয় চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা তাকে বারবার বলেছিলাম যে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হবে না। জনগণ যেদিন জেগে উঠবে সেদিন আপনি পালাতে হবে। ৭ জানুয়ারির আগে এ কথা বহুবার বলেছি।
জোনায়েদ সাকি বলেন, নতুন বন্দোবস্তের জন্য দরকার নতুন সংবিধান। যে সংবিধানে ক্ষমতার কাঠামো হবে গণতান্ত্রিক, যে সংবিধান গ্যারান্টি দিবে জনগণ ক্ষমতার কেন্দ্র। কিন্তু আবারও বলছি এই কথা যদি লেখাও থাকে তার পরেও এটি নিশ্চিত হবে না। যতক্ষণ না পর্যন্ত গণতন্ত্র রক্ষার জন্য একটি জীবন্ত রাজনৈতিক শক্তি মাঠে না থাকে। ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের উপর দাঁড়িয়ে আজকে নতুন বাংলাদেশে যারা রাজনৈতিক দল হিসেবে আছেন, নেতৃত্ব দিতে চান তারা নিজেদেরকে জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের আদর্শে গড়ে তুলবেন। এটাই মানুষ প্রত্যাশা করে।
গণসংহতি আন্দোলন ময়মনসিংহ জলো শাখার আহ্বায়ক মোস্তাফজিুর রহমান রাজীবের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব এ আর এম মুসাদ্দিক আসিফের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখনে গণসংহতি আন্দোলনরে রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য দেওয়ান আবদুর রশিদ নিলু, জাতীয় পরষিদরে সদস্য শামসুল আলম, সম্মিলিত পেশাজীবি সংহতির আহ্বায়ক মির্জা নাজমুল হুদা, জাতীয় পরষিদরে সদস্য অমিত হাসান দিপু প্রমুখ।
মন্তব্য করুন