নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে চাঁদা না পেয়ে এক সৌদি প্রবাসীর নির্মাণাধীন দ্বিতল ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন এক ইউপি সদস্য। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সোনাইমুড়ী থানা ও র্যাব-১১ কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার বজরা শাহী জামে মসজিদ এলাকার ডিলারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
চাঁদাবাজির ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন- বজরা ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোফিজ মেম্বার (৪৫), বজরা গ্রামের বাসিন্দা আমিন (২৮) ও বাবুল (২৬)। ভুক্তভোগী প্রবাসীর নাম সামছুল হক (৬৭)।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুর ১টায় সামছুল হকের বসতঘরে গিয়ে অভিযুক্তরা ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। সামছুল হক এবং তার পরিবার চাঁদার টাকা দিতে রাজি না হওয়ায়, তার পরিবারকে অশালীন ভাষায় গালাগাল ও মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে বাড়ির ভাড়াটিয়াসহ পরিবারের সবাইকে একসঙ্গে আটকে মূল ফটকে তালাবদ্ধ করে দেয় অভিযুক্তরা। পরে আটক অবস্থায় মোবাইলে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের কাছে এ ঘটনার বিষয়ে জানালে তারা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে বিকেলে থানা পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের উপস্থিতিতে ইউপি সদস্যের কাছ থেকে চাবি উদ্ধার করে তালা খুলে দেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সামসুল হকের পুত্র সৌদি প্রবাসী মজিবুল হক জানান, হামলাকারী ও চাঁদা দাবি করা সবাই একই এলাকার সদস্য। তারা এলাকায় মাদক ব্যবসাসহ জমি দখল ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত। যখন যে সরকার আসে, তারা সে-ই সরকারের লোকজনের সঙ্গে আঁতাত করে, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মানুষের কাছে পরিস্থিতি বুঝে চাঁদা দাবি করে। আজ হঠাৎ করে তারা আমাদের বাড়িতে এসে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে। সে টাকা দিতে অস্বীকার করলে আমার পরিবারের সবাইকে মারধর করে এবং ঘরের ভেতরে আটকে দরজায় তালা দিয়ে চলে যায়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তালা খুলে তাদের উদ্ধার করে।
ভুক্তভোগী সামসুল হক জানান, আমরা বাপ-ছেলে প্রবাসে আছি। কিন্তু বর্তমানে আমার পরিবারের লোকজনের ওপর যে কোনো সময় অভিযুক্ত সন্ত্রাসীদের দ্বারা হামলা-মারধরের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি।
এদিকে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মফিজ চাঁদা চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে প্রবাসীর ঘরে তালা দেওয়ার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা সোনাইমুড়ী থানার এসআই কাউসার কালবেলাকে জানান, ভুক্তভোগীর ঘরে তালা দিয়ে কতিপয় লোকজন চাঁদা দাবির ঘটনার সত্যতা রয়েছে। ঘটনা জানতে পেরে থানা পুলিশ সেখানে গিয়ে বসতঘরের তালা খুলে ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করে।
সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোরশেদ আলম কালবেলাকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তালা খুলে দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন