বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় দাঁড়িয়ে বলছি, স্বার্থ হাসিলের জন্য বন্ধুত্ব নয়, সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে বন্ধুত্ব রাখতে চাই। আমাদের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে নয়, কর্তৃত্বের মাধ্যমে নয়, বন্ধুত্বের মাধ্যমে।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য আলহাজ সালমান ওমর রুবেলের আয়োজনে ফ্রি চক্ষু ক্যাম্প অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, গত ১৫ বছর শেখ হাসিনার শাসনামলে ভারত বাংলাদেশের ওপর সীমাহীন খবরদারি করেছে। এত দিন দেখা গেছে, দিল্লির সংকেত ছাড়া একটা ব্যাংকের কেন্দ্রীয় নিয়োগ হয়নি। কে কোথায় বিচারপতি হবেন, কে কোথায় বড় পদে থাকবেন, কে এমপি হবেন, কে মন্ত্রী হবেন তারা সিদ্ধান্ত দিত।
তিনি আরও বলেন, শুধু অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রেই নয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে পরিচালনায়ও তারা হস্তক্ষেপ করেছে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বের সম্পর্কটা দেশের সঙ্গে দেশের হতে হবে, কোনো ব্যক্তি বা দলের সঙ্গে নয়। আমরা বন্ধুত্ব চাই, কারও প্রভুত্ব চাই না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, বন্ধুত্ব আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার সঙ্গে করবেন নাকি বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের সঙ্গে করবেন? ১৮ কোটি মানুষের সঙ্গে যদি বন্ধুত্ব হয় সেটা হবে প্রকৃত বন্ধুত্ব। সেটা দীর্ঘস্থায়ী হবে। শুধু একজনের সঙ্গে বন্ধুত্ব করলে কোনো লাভ হবে না।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরও বলেন, শেখ হাসিনা তার বাবাকে এমন মারা মেরেছে, মসজিদে তার জন্য দোয়া করবে এমন লোকও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সুতরাং আওয়ামী লীগ তাদের নেতার প্রতি অকৃতজ্ঞ। ওদের কিন্তু বরকত ভালো না। যার কারণে তাদের ঝাঁকে ঝাঁকে দেশ থেকে পালাতে হয়েছে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, শেখ মুজিবর রহমান বড় না জিয়াউর রহমান বড়- এটা নিয়ে মাথা নষ্ট করে তাদের অপমান করার প্রয়োজন হয় না। যার যার অবস্থানে, যার যার দায়িত্বে তারা শ্রেষ্ঠ। এটার জন্য সংবিধান বা অন্য কিছু লাগে না। আমরা বড় মানুষগুলোকে বড় করতে গিয়ে ছোট করে ফেলি। ১৫ আগস্টে শেখ মুজিবুর রহমানের জানাজায় লোক পেলাম না, আর এত বছর পরে ১৫ আগস্টে কোনো জায়গায় মাহফিলের আওয়াজ পেলাম না। শেখ হাসিনা নিজ হাতে তার বাবাকে দ্বিতীয়বার হত্যা করেছে।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি, আর ৫ আগস্ট আমরা স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি। এই অর্জন আমাদের ধরে রাখতে হবে। ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বরের গুরুত্ব ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে আরও বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান দেশে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিলেন। এরপর তিনি মারা যাওয়ার পর দেশের মানুষ ৭ নভেম্বর একটি বিপ্লবের মাধ্যমে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।
বিএনপি নেতা সালমান ওমর রুবেলের ফ্রি চক্ষু ক্যাম্প অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ। এ সময় প্রায় ৩ হাজার চক্ষু রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা ও ছানি পড়া রোগীদের বিনামূল্যে ছানি অপারেশনের জন্য সিলেকশন করা হয়।
মন্তব্য করুন