কিশোরগঞ্জের ইটনায় বিপাকে পড়েছেন ভুট্টা চাষিরা। এক মণ ভুট্টা যে দামে বিক্রি করছেন সেই দামে এক কেজি ভুট্টার বীজ কিনতে পারেন কৃষকরা।
উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের কৃষক বীরেশ্বর দাস চলতি মৌসুমে এক একর জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১ চাষ করেছেন। এখন সকাল-সন্ধ্যা পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। হাওরের অন্য কৃষকদের দেখাদেখি গত তিন বছর ধরে ভুট্টা চাষ করেন তিনি। প্রথম বছর ফলন এবং দাম ভালো পেলেও দুই বছর ধরে ভুট্টা বীজ, সার, কীটনাশকের অতিরিক্ত দাম আর বাজার সিন্ডিকেটের জন্য তেমন লাভের মুখ দেখছেন না।
কৃষক বীরেশ্বর দাস বলেন, আমি তিন বছর ধরে এক একর জমিতে ভুট্টা চাষ করছি। প্রথমবার ফলন ভালো হয়েছিল কিছু লাভ পেয়েছিলাম। এই বছর এক কেজি বীজ ৭৩০ টাকা দিয়ে কিনতে হয়েছে। আবার সার, কীটনাশক, শ্রমিক খরচ আছে। সব মিলিয়ে খরচ বেশি, কিন্তু বিক্রির সময় এক মণ বিক্রি করতে হয় ৭৫০-৮০০ টাকায়।
কৃষক বীরেশ্বর দাসের মতো হাওরের অনেক কৃষকই ভুট্টা চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও বীজ, সার, কীটনাশকের অতিরিক্ত দাম আর বাজার সিন্ডিকেটের জন্য হতাশায় ভুগছেন।
সদর ইউনিয়নের ভুট্টা চাষি ফারুক মিয়া ও আক্কাস আলী জানান, গতবছর ভুট্টা বীজ কেজি প্রতি ৪৩০ থেকে ৪৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া গেছে। কিন্তু এ বছর দাম বেড়ে ৭৩০-৭৫০ টাকা কেজি হয়েছে। এ ছাড়াও সার, কীটনাশকের দাম বেড়েছে। অথচ যখন ভুট্টা বিক্রি করা হয় তখন মণ প্রতি দাম ৮০০ টাকাও হয় না। ধানের চেয়ে ভুট্টায় খরচের পরিমাণ কম এবং ফলন ভালো হয় কিন্তু বাজার সিন্ডিকেটের কারণে ভুট্টার সঠিক দাম পাওয়া যায় না।
ইটনা উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের ১৯০ জন চাষিকে ভুট্টার বীজ ও সার প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে ৩০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধি হয়ে ৭৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ উজ্জ্বল শাহা বলেন, দিন দিনই হাওরে ধান চাষের পাশাপাশি ভুট্টা চাষে কৃষকরা আগ্রহী হচ্ছেন। ভুট্টা চাষে সারের পরিমাণ বেশি লাগে কিন্তু ধান চাষের চেয়ে তুলনামূলক খরচ কম।
মন্তব্য করুন