কালবেলা প্রতিবেদক, গাজীপুর
প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৩ এএম
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪১ এএম
অনলাইন সংস্করণ

হত্যা মামলায় সাদপন্থি নেতা মুয়াজ বিন নূর গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় সাদপন্থি নেতা মুয়াজ বিন নূর গ্রেপ্তার
মোয়াজ বিন নুর। ছবি : সংগৃহীত

টঙ্গীর তুরাগতীরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দান দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে তিনজন নিহতের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মাওলানা জুবায়েরের অনুসারী এস এম আলম হোসেন বাদী হয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানায় মামলাটি করেন। এতে মাওলানা সাদ কান্ধলভীর ২৯ জন অনুসারীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও কয়েক শ জনকে আসামি করা হয়। ওই মামলার ৫নং আসামি মোয়াজ বিন নুরকে গ্রেপ্তার করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ।

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি মো. হাবিব ইস্কান্দার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মোয়াজ বিন নুর (৪০), তিনি উত্তরার ৭নং সেক্টরের বাসিন্দা। তার বাবার নাম মৃত নুর মোহাম্মদ।

ওসি বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মাওলানা জুবায়ের অনুসারী এস এম আলম হোসেন বাদী হয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) টঙ্গী পশ্চিম থানায় এ মামলাটি করেন। মামলা দায়েরের পর রাতে মোয়াজ বিন নূর কে রাজধানীর উত্তরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হবে।

মামলায় আসামিরা হলেন ঢাকার ধানমন্ডি থানার আবাসিক এলাকার মৃত রিফকুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম, খুলনার বাটিয়াঘাটা উপজেলার বড় কড়িয়া গ্রামের মনসুর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহ মনসুর, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলামের ছেলে ওসামা ইসলাম আনু, একই এলাকার ড. কাজী এরতেজা হাসান, উত্তরা এলাকার মৃত নূর মোহাম্মদের ছেলে মোয়াজ বিন নূর, সাভার থানা এলাকার জিয়া বিন কাশেম, তুরাগ থানা (বেলাল মসজিদ) এলাকার আজিমুদ্দিন, সাভার থানার সৈয়দ আনোয়ার আব্দুল্লাহ, মুগদা থানা (বড় মসজিদ) এলাকার শফিউল্লাহ, কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজরা এলাকার মৃত মাওলানা মোজাম্মেলুল হকের ছেলে আনাস, মোহাম্মদপুর থানা এলাকার আব্দুল্লাহ শাকিল, রমনা থানার কাকরাইল এলাকার রেজা আরিফ, উত্তরা পশ্চিম থানার (সেক্টর-৯) আব্দুল হান্নান, একই থানার (সেক্টর-১১) রেজাউল করিম তরফদার, তুরাগ থানার (বেলাল মসজিদ) এলাকার মুনির বিন ইউসুফ, ঢাকার সায়েম, হাজী বশির সিকদার, কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার চন্দনপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে মনির হোসেন, মীরপুর থানা এলাকার প্রকৌশলী মুহিবুল্লাহ, ঢাকার পল্লবী থানা এলাকার আজিজুল হকের ছেলে আতাউর রহমান, এলিফ্যান্ট এলাকার তানভীর, তুরাগ থানার ভাটুলিয়া এলাকার মৃত ওয়াজ উদ্দিনের ছেলে বাবুল হোসেন, একই থানা এলাকার প্রকৌশলী আবুল বশর, প্রকৌশলী রেজনুর রহমান, উত্তরা থানার (সেক্টর ১০) মৃত ফজলুল হক সিকদারের ছেলে নাসির উদ্দিন সিকদার, ড. আব্দুস সালাম, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওয়াসি উদ্দিন, রাজধানীর মীরপুর থানা এলাকার মিজান, তুরাগ থানার (বেলাল মসজিদ) এলাকার শাহাদাতসহ কয়েক শ জনকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, উল্লেখিত আসামিরা মাওলানা সা’দ কান্ধলাভীর অনুসারী। গত ৪ ও ৭ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমায় বাধা দিয়ে ইসলামের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য চেষ্টা করে। তারা সরকারকে বিব্রত করার উদ্দেশ্যে সরকারি সিদ্ধান্ত বহির্ভূত আগামী ২০ থেকে ২৪ ডিসেম্বর টঙ্গী ময়দানে সা’দপন্থিদের জোড় করার মর্মে ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে প্রোপাগান্ডা করতে থাকে। মামলার প্রধান আসামি সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম তার সই করা চিঠির মাধ্যমে সারা দেশের সা’দপন্থিদের জানান যে আগামী ২০ থেকে ২৪ ডিসেম্বর টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা ময়দানেই পুরনোদের জোড় হবে। ওই চিঠিতে পুরনো সাথিদের সঙ্গে মোনাসেব সাথিদেরও নিয়ে আসে এবং তাদের সঙ্গে যেন টর্চলাইট ও হ্যান্ডমাইক থাকে।

মামলার ২ নম্বর আসামি আব্দুল্লাহ মনসুর ফেসবুক লাইভে ঘোষণা দেন, পুরনোদের জোড়ে এবং বিশ্ব ইজতেমায় যদি মাওলানা সা’দ সাহেবকে আনতে দেওয়া না হয় এবং তাদের যদি টঙ্গী ময়দানে ২০ থেকে ২৪ ডিসেম্বর জোড় করতে দেওয়া না হয়, তাহলে তারা সরকারের সিদ্ধান্তমতে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব হতে দেবে না।

তাদের এসব উসকানিমূলক বক্তব্য বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ৩টার দিকে ঘুমন্ত ও পাহারারত আলমি শুরার সাথিদের ওপর হামলা করে। তাদের হামলায় কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দু গ্রামের মৃত ওসমান গণির ছেলে আমিনুল ইসলাম বাচ্চু (৬৫), ফরিদপুর সদর উপজেলার কমলাপুর গ্রামের মৃত শেখ সামাদের ছেলে বেলাল হোসেন (৬০) এবং বগুড়া সদর উপজেলার ধাওয়াপাড়া গ্রামের ওমর উদ্দিনের ছেলে তাজুল ইসলামকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে।

এদিকে পুলিশের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কিছু মুসল্লি মাঠে অবস্থান করছেন। তারা দাবি করছেন, ইজতেমা মাঠের মালামাল পাহারা দেওয়ার জন্য তারা মাঠে রয়েছেন।

মাওলানা জুবায়ের অনুসারীদের পক্ষে থাকা মুসল্লি খায়রুল বাশার বলেন, ‘আমরা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ও মুরব্বিদের নির্দেশনা অনুযায়ী মাঠে এসেছি। প্রায় ৫০০ সাথি মাঠে মালামাল পাহারা দিচ্ছেন।’

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) এন এম নাসিরুদ্দিন বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাঠে জুবায়ের অনুসারীদের ৫০০ লোক মালামাল পাহারা দেওয়ার জন্য থাকতে পারবে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঢাকায় কখন আসছেন রাহাত ফতেহ আলী

জিয়াউর রহমানকে রাজাকার বলা যুবলীগ নেতার বাড়িতে হামলা

পূর্বাচলে বুয়েট শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় সাইয়েদ আব্দুল্লাহর পোস্ট

উপদেষ্টা হাসান আরিফ মারা গেছেন

‘প্রতিবেশী অন্যায় হাত বাড়ালে আমরা বরদাশত করব না’

মারা গেছেন নির্মাতা সি বি জামান

পাগলা কুকুরের কামড়ে আহত অর্ধশতাধিক

‘এই ভূখণ্ড জীবন দিয়ে হলেও জামায়াতের সদস্যরা রক্ষা করবে’

পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-খুলনা রুটে ট্রেনের ভাড়া ও সময়সূচি

নেপালকে উড়িয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

১০

ব্যাটে রান নেই তবুও নেতৃত্বের জন্য প্রস্তুত লিটন

১১

বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের ‘বিওএ ম্যারাথন’ অনুষ্ঠিত

১২

গাছে বেঁধে ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি

১৩

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে তারেক রহমানের অভিনন্দন

১৪

ভাইব্রেন্ট এখন উত্তরায়, উদ্বোধন উপলক্ষে ২৪% ছাড়!

১৫

৫০০ টাকা তুলে কোটিপতি স্কুলশিক্ষার্থী, আচমকাই নিঃস্ব!

১৬

দেশীয় অস্ত্রসহ শ্রমিক লীগ নেতার ভিডিও ভাইরাল

১৭

রেমিট্যান্স যোদ্ধারা দেশের রিয়েল হিরো : আইসিবির চেয়ারম্যান

১৮

বিলে মিলল যুবকের মরদেহ

১৯

বাংলাদেশে একদিনে হলিউডের দুই সিনেমা

২০
X