নির্বাচনী বিরোধ ও খাসজমি দখলকে কেন্দ্র করে বিএনপির অঙ্গসংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের তরিকুল ইসলাম শেখ (২৬) নামের এক কর্মীকে কুপিয়ে জখম করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনার জেরে তরিকুলের স্বজনরাসহ দলীয় নেতাকর্মীরা হামলাকারী আওয়ামী লীগের ১১ নেতাকর্মীর অন্তত ৩৫টি ঘরবাড়িতে আগুন দিয়েছে।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত পাবনা ঈশ্বরদীর বহুল আলোচিত ৬ খুনের এলাকা (সিক্স মার্ডার) লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের কামালপুর ও সাহাপুরের চরগড়গড়ি আলহাজ মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী তরিকুল ইসলাম উপজেলার লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের কামালপুর ও সাহাপুরের চরগড়গড়ি আলহাজ মোড় এলাকার রিকাত আলী শেখের ছেলে।
আগুনে পুড়ে যাওয়া ইউনিয়নের নসিরের ঘাট এলাকার মৃত নুর আলী প্রামাণিকের ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুল ইসলাম মেম্বার, আকুব্বার প্রাং, মোমিন প্রাং, আলামিন প্রাং, মৃত আলিমুদ্দি মীরের ছেলে শফি ঘোষ, মৃত লাল চাঁদের ছেলে চাঁদ আলী, জহুরুলের ছেলে আশিক, মৃত মুজাম সরদারের দুই ছেলে আজিম সরদার, নাজিম সর্দারের বাড়ি ঘর।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরের পর ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, ঘটনার সময় তরিকুল ইসলাম ইসলাম শেখ তালবাড়ির চরে যান। এ সময় আওয়ামী লীগ সমর্থকের লোকজন তার পায়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। পরে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। পরে স্বেচ্ছাসেবক দলের তরিকুলের স্বজনরা ও দলীয় নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে আওয়ামী লীগের ওই নেতাকর্মীদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন।
আহত তরিকুল ইসলামের বরাত দিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতা সাইদুল ইসলাম প্রামানিক বলেন, চরে জমি দেখতে গেলে আওয়ামী লীগ নেতা তরিকুল ইসলাম মেম্বারের হুকুমে তার পক্ষের লোকজন আসাদুল মেম্বার, আলামিন প্রাং, আকুব্বার, শফি, আশিক, নাজিমসহ অন্যান্যরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তরিকুলের পায়ের রগ ও হাটু কেটে ফেলে। তরিকুলের অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে দ্রুত পাবনা থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয়।
আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে আমরা নিজবাড়িতে গৃহবন্দি। নিজেদের নামীয় ও সরকার থেকে লিজ নেওয়া চরের জমি ছেড়ে এসেছি। এই জমি এখন বিএনপি নেতা সাইদুল ইসলাম প্রামানিক ও কুষ্টিয়ার হরিশপুরের জনৈক মুকুল গ্রুপ দখল করে নিয়েছে। এই নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ চলছে। এই বিরোধের জেরে মুকুল গ্রুপই স্বেচ্ছাসেবক দলের তরিকুল ইসলামকে কুপিয়ে জখম করেছে। আমরা এ জন্য দায়ী নই।
ঈশ্বরদী থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে লক্ষ্মীকুন্ডার দুর্গম এলাকায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অন্ধকার হয়ে যাওয়ায় নিরাপত্তাজনিত কারণে ফিরে এসেছি। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেনা ও র্যাব সদস্যরা এলাকা টহলে রয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে এ ব্যাপারে থানায় এখনও লিখিত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন