নাটোরের বড়াইগ্রামে এক রাতে ডিজেলচালিত ১৩টি সেচযন্ত্র চুরির ঘটনা ঘটেছে। এতে স্থানীয় গড়মাটি বিলের প্রায় ৩০০ বিঘা জমির ফসল আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। গতকাল বুধবার এ বিষয়ে প্রতিকার পেতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ইউএনও এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার দপ্তরে গিয়ে অভিযোগ করেছেন। এদিকে মাত্র এক সপ্তাহ আগে বড়াইগ্রাম ইউনিয়নের রোলভা বিল থেকেও আটটি সেচযন্ত্র চুরির ঘটনা ঘটেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতের কোনো এক সময় সংঘবদ্ধ চোরের দল উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের গড়মাটি বিল থেকে ওই গ্রামের কৃষক আহসানুল আমিন, নঈম উদ্দিন, মোজাম্মেল হোসেন, খালেদ হোসেন, শহিদুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, মিলন হোসেন, সাইদুল ইসলাম, মো. রনি, আরমান মোল্লা, মিজানুর রহমান ও ইয়ার আলীর মোট ১৩টি শ্যালো মেশিন চুরি করে নিয়ে যায় চোররা।
গড়মাটি গ্রামের খালেদ হোসেন জানান, শ্যালো মেশিনে সেচ দিয়ে তারা যুগ যুগ ধরে ফসল আবাদ করে আসছেন। প্রতিদিন বাড়ি থেকে আনা-নেওয়ার সমস্যার কারণে তারা মেশিনগুলো বস্তা দিয়ে ঢেকে বিলেই রেখে আসতেন। এর আগে এ বিলে কখনো এমন চুরি হয়নি। মেশিনগুলোর মধ্যে নতুনগুলোর একেকটি ২০-২৫ হাজার এবং পুরোনোগুলোর একেকটির দাম ১০-১৫ হাজার টাকা। চাষাবাদের ভরা মৌসুমে এমন চুরির ঘটনায় দরিদ্র কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
অপর কৃষক আহসানুল আমিন বলেন, মঙ্গলবার রাতেও আমি শ্যালো মেশিন দিয়ে জমিতে পানি দিয়েছি। রাতে আমাদের বিল থেকে ১৩টি মেশিন চুরি হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, এতে প্রায় ৩০০ বিঘা জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এসব জমিতে রসুন, গম, ভুট্টাসহ চৈতালি ফসল রয়েছে।
ইউএনও লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, গড়মাটি গ্রামের ১২ জন কৃষকের মোট ১৩টি সেচযন্ত্র চুরির খবর পেয়েছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে চোরদের শনাক্ত করে সেচযন্ত্রগুলো উদ্ধার করতে পুলিশ প্রশাসনকে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ওইসব কৃষককে সৌরবিদ্যুৎচালিত সেচযন্ত্র দেওয়াসহ কীভাবে সহযোগিতা করা যায় সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।
বড়াইগ্রাম থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম বলেন, এরই মধ্যে চোর চক্রকে ধরতে আমরা মাঠে নেমেছি। অল্প সময়ের মধ্যেই চোরদের শনাক্ত করা সম্ভব হবে আশা করি।
মন্তব্য করুন