সরকারি বরাদ্দের গভীর নলকূপ, রাস্তাঘাটসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার নামে মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে যুবলীগ নেতা মো. মহসিন আলম মোহনকে ত্যাজ্য ঘোষণা করেছেন তার বাবা ছিদ্দিকুর রহমান।
মঙ্গলবার রাতে সন্তানকে ত্যাজ্য ঘোষণা করার তথ্য নিশ্চিত করেন ছিদ্দিকুর রহমান নিজেই। মো. মহসিন আলম চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।
এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর ছিদ্দিকুর রহমান চাঁদপুরের নোটারি পাবলিক কার্যালয়ের আইনজীবী এ কে এম লোকমান হোসাইনের মাধ্যমে ছেলেকে ত্যাজ্যপুত্র সম্পর্কিত হলফনামা সম্পাদন করেন।
হলফনামায় সাক্ষী হিসেবে ছিলেন ছিদ্দিকুর রহমানের স্ত্রী ফাতেমা বেগম, মেয়ে সাহানা আক্তার ও আত্মীয় খলিলুর রহমান। মহসিন আলম তার বড় ছেলে এবং ওই ইউনিয়নের হামছাপুর গ্রামের ছৈয়াল বাড়ির বাসিন্দা।
ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমার ছেলে গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিল। সে গত কয়েক বছর পলাতক রয়েছে। ২০১৪ সালের পর তার সঙ্গে আমার আর কোনো সম্পর্ক নেই। আমি অসুস্থ হওয়ায় তাকে স্থানীয় খাজুরিয়া বাজারে আমার হার্ডওয়্যার দোকান দেখাশোনা করতে দিয়েছি। সেখান থেকে ১০ বছরে সে ৪০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। লোকজনকে, ডিপ টিউবওয়েল ও রাস্তাঘাটসহ সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার নাম করে বহু অর্থ আত্মসাৎ করেছে। মানুষ এখন আমাকে টাকার জন্য বিভিন্ন স্থানে অপমান-অপদস্ত করে। তাই আমি জীবনের নিরাপত্তা ও আত্মসম্মান রক্ষার জন্য তাকে ত্যাজ্য করতে বাধ্য হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, গত ৫ আগস্টের পর পাওনাদাররা আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ১২ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। আরও যারা টাকা পাবে, তারা আমাকে এসে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। যে কারণে আমি এখন বাড়ি থেকে বের হতে পারি না। আর আমার ছেলে বিগত দিনে তাকে লোকজনের টাকা ফেরতসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের টাকা হিসাব চাইলে আমাকে এবং পরিবারের সদস্যদের বেশ কয়েকবার প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
হলফনামায় ছিদ্দিকুর রহমান উল্লেখ করেন, ‘নিজের জীবনে নিরাপত্তা ও আত্মসম্মান রক্ষায় বাধ্য হয়ে আমি সবার সামনে আমার ছেলে মহসিনকে ত্যাজ্যপুত্র হিসাবে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলাম।’
চার বছর ধরে মো. মহসিন আলম মোহন স্ত্রীসহ পলাতক। তাই এ বিষয়ে জানতে তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি কামাল পাটওয়ারী বলেন, মো. মহসিন আলম মোহন মানুষকে সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেবে বলে টাকা আত্মসাৎ করেছে। সে পলাতক রয়েছে।
মন্তব্য করুন