যশোর বিআরটিএ অফিসে দালালের মাধ্যমে ঘুষ ছাড়া সেবা মেলে না। সেবাগ্রহীতাদের জিম্মি করে ঘুষ আদায় করে একটি দালাল চক্রটি। অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে ঘুষ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে তারা। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একটি টিম। অভিযানে পাঁচ দালালকে আটক করা হয়।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের উপপরিচালক মো. আল আমিনের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালন করা হয়।
এ সময় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল আহাদ ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে চারজনকে অর্থদণ্ড প্রদান করেন। একজন মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন।
অভিযানে যশোর সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া এলাকার গোলাম রব্বানী বিশ্বাসের ছেলে মাহাবুব হাসান শিমুলকে ১০ হাজার টাকা, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে হুমায়ুন কবির মামুনকে ৬ হাজার টাকা, যশোরের অভয়নগর উপজেলার মশরহাটি গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে আবদুল ওয়াদুদ পলাশকে ৫ হাজার টাকা ও যশোর সদর উপজেলার বিরামপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে শফিকুল ইসলামকে ৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একইসঙ্গে যশোর শহরের শংকরপুর এলাকার হালিমের ছেলে খোকনকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
দুদক যশোরের উপপরিচালক মো. আল আমিন বলেন, আমাদের কাছে অভিযোগ ছিল যশোর বিআরটিএ অফিসে দালালের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। দালালের মাধ্যমে ঘুষ ছাড়া কোনো সেবা পাওয়া যায় না। বুধবার সকালে দুদকের ছদ্মবেশী টিম পাঠানো হয় বিআরটিএ অফিসে। সেখানে দালালদের মাধ্যমে ঘুষ দিয়ে সেবাপ্রাপ্তির চুক্তি করে দুদক টিমের সদস্যরা। ঘুষ বাণিজ্যে জড়িত দালাল, অফিস কর্মকর্তা, কর্মচারীদের চিহ্নিত করা হয়। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় দুপুরে দুদকের আভিযানিক টিম সেখানে যায়। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত ছিলেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে চার দালালকে অর্থদণ্ড করা হয়। একজনকে মুচলেকা নিয়ে সতর্ক করা হয়।
তিনি বলেন, বিআরটিএ অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে যোগসাজশে দালাল চক্রটি সেবাগ্রহীতাদের জিম্মিকে ঘুষ আদায় করেন। শুধু দালাল চক্র নয়, অভিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন, দুদক যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আল আমিন, উপসহকারী পরিচালক জালাল উদ্দিন, তৌহিদুর রহমান, কৃষ্ণপদ বিশ্বাস।
এ বিষয়ে বিআরটিএ যশোরের সহকারী পরিচালক এএসএম ওয়াজেদ হোসেন বলেন, চারদিন হলো আমি এখানে যোগদান করেছি। দুদক যাদের ধরেছে, তারা অফিসের বাইরে রাস্তায় ছিল। আমার অফিসে কেউ সেবা নিতে এসে যেন ঘুষ দিতে না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকব।
মন্তব্য করুন